এর জন্য ৩ জন রোগীর পরিবার আলাদা করে অভিযোগ করে। এরপরেই বড় পদক্ষেপ নেয় রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন। এদের বিলে প্রচুর পরিমাণ টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। জানা যায়, এই তিনটি পরিবার অভিযোগ করলেও এরা ছাড়াও অন্য অনেক রোগীর একই সমস্যা হয়েছে। কিন্তু তারা কোনও অভিযোগ করেননি।
এরপরেই আরও একধাপ এগিয়ে যুগান্তকারী রায় দেয় কমিশন। আমরি হাসপাতালের তিনটি শাখাকে পার্শ্ববর্তী বস্তি অঞ্চলগুলির শিশুদের বিনামূল্যে মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার এবং বিনামূল্যে খাওয়ার পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। যেমন, ঢাকুরিয়া আমরিকে পঞ্চানন তলা এবং গোবিন্দপুর বস্তি, সল্টলেক আমরিকে দত্তাবাদ বস্তি এবং মুকুন্দপুর আমরিকে নিকটবর্তী কোনও বস্তি অঞ্চলের সমস্ত শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা বিনামূল্যে করতে হবে।
advertisement
আগামী দু-মাস সপ্তাহে একদিন করে বিনামূল্যে খাবারও পৌঁছে দিতে হবে এই বস্তির শিশুদের জন্যে। এবং তার সঙ্গে অন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা বিনামূল্যে করতে হবে বলেই এদিন স্পষ্ট নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য কমিশন। এছাড়াও কমিশন আমরি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে এই এলাকার কাউকে যদি কোনও হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন মনে হয় তাঁকে বিনামূল্যে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হবে।
শুধু আমরি-ই নয়। একইধরনের সীমা ছাড়ানো বিলের অভিযোগ এসেছে শহরের অন্য ছোট বড় হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের বিরুদ্ধেও। যেমন, একই ধরণের অভিযোগ উঠেছে গিরীশ পার্কের একটি ১৪ বেডের ছোট নার্সিং হোম-এর বিরুদ্ধেও। নার্সিং হোমটির নাম আশীর্বাদ নার্সিং হোম। জানা গিয়েছে, বিলে তারতম্যের অভিযোগ করেছেন হাবড়ার বাসিন্দা স্মৃতি কণা কুণ্ডু। ৬৬ বছর বয়সি ওই মহিলার কাছ থেকে ভর্তির সময় ১ লাখ টাকা জমা নেয় নার্সিংহোম। পিপিই কিট, আর এম ও, ওষুধ ইত্যাদি মিলিয়ে ৭ দিনে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার মাত্রাতিরিক্ত বিল নেয় ওই নার্সিংহোম।
এক্ষেত্রেও দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন। কমিশন রায় দিয়েছে, প্রতিদিন ২০ হাজার টাকার বেশি বিল হওয়া কোনওমতেই কাম্য নয়। ফলে মোট ১ লাখ ২০ হাজার টাকা হাসপাতালের বিল হিসেবে ধার্য্য করতে হবে। বাকি ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা ৬ টি কিস্তিতে রোগীর পরিবারকে অবিলম্বে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনের রায়ে বলা হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছোটোখাটো নানা নার্সিংহোম রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। তাই বেশি বিল মনে হলেই কমিশনের কাছে অভিযোগ করুন রোগীর পরিবার। সব ক্ষেত্রেই কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে কমিশন।