মোবাইল গেমিং অ্যাপ সংক্রান্ত প্রতারণার একটি মামলায় শনিবার শহরের ৬ জায়গায় তল্লাশি অভিযান শুরু করে ইডি। ২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পার্ক স্ট্রিট পুলিশ স্টেশনে একটি এফআইআর দায়ের হয়, যার ভিত্তিতে শুরু হয় তদন্ত। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০, ৪০৬, ৪০৯, ৪৬৮, ৪৬৯, ৪৭১ ও ৩৪ ধারায় অভিযুক্ত আমির খানের বিরুদ্ধে চিফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট-এর এজলাসে অভিযোগ দায়ের করে ফেডেরাল ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, নেসার আহমেদ খান-এর ছেলে আমির খান ই-নাগেটস নামে একটি মোবাইল গেমিং অ্যাপলিকেশন লঞ্চ করে।
advertisement
আরও পড়ুন: করোনায় ঘরবন্দি মানুষকে ঠকাতে জমজমাট টোপ, লকডাউনেই কোটি কোটি কামিয়েছে গার্ডেনরিচের আমির!
এই অ্যাপটির মাধ্যমেই চলতে থাকে প্রতারণার কাজ। প্রাথমিক ভাবে ওই অ্যাপের মাধ্যমে খেলায় অংশগ্রহণকারী গ্রাহকেরা কমিশন পেতেন। ওয়ালেট-এ যে ব্যালেন্স জমা হত, তা কোনও ঝামেলা ছাড়াই যখন ইচ্ছে তুলে নেওয়া যেত। এ ভাবেই গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জনের পর আমিররা তার ফায়দা তুলতেন বলে ইডির দাবি। মোটা কমিশনের লোভে গ্রাহকেরা মোটা অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করতে থাকলেন! এর পরেই ঘটল বিপত্তি! আচমকাই একদিন দেখা গেল তাঁরা অ্যাপ-এর থেকে আর টাকা তুলতে পারছেন না।
আরও পড়ুন: 'চোখে দেখে ভোট দেবেন', টোটকায় কাজ হচ্ছে কতটা? রিপোর্ট নেবেন তৃণমূল শীর্ষনেতা
এর পর রাতারাতি অ্যাপ-এর সার্ভার থেকে মুছে দেওয়া হল সমস্ত ডেটা। ততক্ষণে গ্রাহকেরা আন্দাজ করে ফেলেছেন, কতবড় প্রতারণার শিকার হয়েছেন!শনিবার তল্লাশি অভিযানের সময় একাধিক ভুয়ো অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ইডি। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে মোবাইল অ্যাপ সংক্রান্ত প্রতারণার মামলার তদন্তে নিউটাউন, পার্ক স্ট্রিট, মোমিনপুরের বন্দর এলাকা, গার্ডেনরিচের শাহি আস্তাবল গলি-সহ ছয় জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালান ইডি আধিকারিকেরা। হানা দেয় শাহি আস্তাবল গলির নেসার আহমেদ খান ও আমির খানের বাড়িতেও। নিসারের বাড়ির দোতলার একটি ঘরের খাটের তলায় অসংখ্য প্লাস্টিকের থলিতে ভরা ছিল থরে থরে নোটের বান্ডিল।
মেটিয়াবুরুজ থানার নাকের ডগায় থাকা বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা। যে এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার হয়েছে সেই এলাকাটি ফিরহাদ হাকিমের বিধানসভা এলাকার মধ্যে পড়ে। যদিও যার বাড়ি থেকে এই টাকার পাহাড় উদ্ধার হয়েছে তাকে চেনেন না বলে দাবি করেছেন ফিরহাদ হাকিম। তবে ফিরহাদ হাকিমকে কটাক্ষের সুরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বললেন, 'যে এলাকা থেকে টাকার পাহাড়ের সন্ধান মিলেছে সেই এলাকার সম্বন্ধেই তো ওনাকে বলতে শোনা গিয়েছিল মিনি পাকিস্তান। এই টাকা তৃণমূলেরই'। শুভেন্দুর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, 'দেখুন না কি হয়'। যদিও ফিরহাদ হাকিমের পাল্টা, 'উদ্ধার হওয়া টাকার সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই'।