বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে চার বাঙালি পর্বোতারোহী সত্যরূপ সিদ্ধান্ত, মলয় মুখোপাধ্যায়, দেবাশিস বিশ্বাস এবং কিরণ পাত্র জোগাড় করেছেন নেপালের 'আমা দেবলাম' শৃঙ্গ জয়ের ছাড়পত্র। আগামী রবিবার ১ নভেম্বর তাঁরা রওনা হচ্ছেন। কোভিড আবহে 'আমা দেবলাম' জয় করা নেহাৎ সহজ নয়। কিন্তু এমন দুর্গম শৃঙ্গ জয় করার চ্যালেঞ্জ নিতে তাঁরা সব সময়েই প্রস্তুত। তাই ঝুঁকি আছে মেনে নিয়েও তাঁরা কোমর বাঁধছেন আবার বেড়িয়ে পড়ার উত্তেজনা নিয়ে। আর কোভিড পরিস্থিতি এবং লকডাউনের জেরে তাঁদের এই সামিটই হতে চলেছে কোভিডোত্তর পরিস্থিতিতে প্রথম পর্বোতারোহণের কাহিনি।
advertisement
তবে নয়া পরিস্থিতিতে সামিট করার আগে মানতে হবে নানা বিধি। আরটিপিসিআর পরীক্ষার মাধ্যমে প্রথমে নিজেকে কোভিড সংক্রমণ মুক্ত প্রমাণ করতে হবে। তার সঙ্গে নিজেদের জন্য বিমা করতে হবে। তার পরেই মিলবে পর্বোতারোহণের প্রয়োজনীয় সবুজ সঙ্কেত।
পোড়খাওয়া পর্বোতারোহী সত্যরূপের কথায়, "সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরেও হ্যাপা কম পোহাতে হচ্ছে না। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম বিমানে কাঠমান্ডু চলে যাব। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিমান বাতিল হওয়ায় এখন ট্রেনে শিলিগুড়ি গিয়ে, সেখান থেকে ঢুকতে হবে নেপালে। কিন্তু কী ভাবে তা যাওয়া হবে, তা নিয়ে এখনও আমরা নিশ্চিত নই। তাই সব অনুমতি মেলার পরেও সামিট শেষপর্যন্ত আমরা করে উঠতে পারব কি না, সেটাই আমরা নিশ্চিত নয়।"
দেবাশিস বিশ্বাস শোনাচ্ছেন আর এক আতঙ্কের কথা। তিনি বলেন, "যে কোনও পর্বোতারোহণের আগে যে পরিমাণ শারীরিক কসরৎ এবং প্রস্তুতি আমরা নিতে পেরেছি, এমনটা নয়। আমরা এখনও জানি না, শারীরিক ভাবে আমরা কতটা ফিট। সামিট শুরু হলেই এ ব্যাপারে নিশ্চিত সিদ্ধান্ত নিতে পারব।"
মলয় মুখোপাধ্যায়ের মতে আবার "সাধারণ পরিস্থিতিতে অনেকে মিলে আমরা সামিটে যাই। সেটা এ মুহূর্তে সম্ভব নয়। তাই অল্প কয়েক জন মিলে যেতে হচ্ছে বলে একটু ভয়-ভয় ভাব আছে বইকি! আর একটু বড় দল হলে আমরা আর একটু বেশি মানসিক বল পেতাম।"
তবে বাড়িতে বন্দি না থেকে ফের পর্বত জয়ে বেরিয়ে পড়ার নেশায় আপাতত এ সব ছোটখাটো ভয় বা আতঙ্ক নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ সত্যরূপেরা। আপাতত ফের হিমালয়ে বরফে ঢাকা আর এক দুর্গম শৃঙ্গ জয়ের নেশাতেই বুঁদ হয়ে রয়েছেন চার বাঙালি পর্বোতারোহী।
SHALINI DUTTA