সকাল তখন সাতটার কাছাকাছি, হঠাৎ করে বিস্ফোরণের শব্দের আওয়াজে ঘুম ভাঙল সবার। প্রতিবেশীরা ছুটে এসে দেখেন বেলেঘাটা মেন রোডের একটি ক্লাবের তিন তলার ঘর থেকে কালো ধোঁয়া। প্রথমে সবাই না বুঝে উঠতে পারলেও পরে বুঝে যান কোন বিস্ফোরণের জন্য এই আওয়াজ। চার দেওয়ালের পাঁচিলের মধ্যে পাশাপাশি দুটি মোটা পাঁচিল ভেঙে যায়। ছাদের কংক্রিটের আস্তরণের একাংশ ভেঙে যায়। সেই আস্তরণের একটি অংশ ছিটকে পড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশ কিছুটা অংশ। যে অংশটি মূল ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার উপরে অর্থাৎ ছাদের দিকে কালো দাগ স্পষ্ট। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই জোরালো ছিল যে মোটা দুটি ইটের পাঁচিল পুরো ভেঙে যায়। ঠিক যে অংশে এই বিস্ফোরণ হয় তার উল্টো দিকের একটি কাঁচের জানলার একটা অংশ ভেঙে যায়। বেলেঘাটা গান্ধী মাঠ ফেন্ড সার্কেলের ছাদে এই বিস্ফোরণ হওয়ায় চলে আসেন ক্লাবের সদস্যরা। এক সদস্যের দাবি, সামাজিক বিভিন্ন কাজ করা হয় এই ক্লাব থেকেই। সকালে বেশ কিছু ব্যাক্তি বোম ছুড়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনার পরে বেলেঘাটা থানার পুলিশ ও ডিসি ইএসডি অজয় প্রসাদ বলেন, পুরো বিষয়টি দেখা হচ্ছে, তদন্ত চলছে।
advertisement
দুপুরের পর ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থলে এসে সংগ্রহ করে বেশ কিছু নমুনা। ঘটনাস্থলে বিস্ফোরকের তীব্রতা মাপা ও অভিঘাত কতটা তাও দেখেন ফরেন্সিকের টিম। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, বিষ্ফোরক মজুত ছিল ক্লাবের মধ্যেই। ঘটনাস্থল ঘুরে নমুনা সংগ্রহ করার পাশাপাশি প্রচুর স্পিংটার উদ্ধার হয়েছে। ক্রুড বোম বানানোর সামগ্রীও মজুত ছিল বলে দাবি ফরেন্সিকের।
দুপুর শেষ করে বিকাল হতেই বিজেপির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় সহ বেশ কিছু সমর্থক আসেন ঘটনাস্থলের কাছে। পুলিশ তাদের ঘটনাস্থল পর্যন্ত পৌছাতে না দিলে শুরু হয় তর্কবিতর্ক। লকেট চট্টোপাধ্যায় জানান, পুলিশের তদন্তের উপর কোন ভরসা নেই, তদন্ত হোক এনআইএ দিয়ে। বেলেঘাটার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাঠানো হবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে। মঙ্গলবার রাতেই পুলিশ পুরো ঘটনা দেখে নিজেই মামলা করে অচেনা ব্যাক্তির বিরুদ্ধে । ভারতীয় দন্ডবিধির ১২০ বি ও ২৮৬ ধারা ও বিস্ফোরক আইনের প্রয়োগ করা হয়।