ডিভিশন বেঞ্চ থেকে কার্যত শূন্য হাতেই ফিরতে হল বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত-কে। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি কৌশিক চন্দ ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার জানায়, বিধান নগর পুরসভা জরিমানার ১১হাজার টাকা প্রাক্তন মেয়র-এর থেকে নেবে না, তাই এক্ষেত্রে ডিভিশন বেঞ্চের বিচার্য উপাদান আর কিছুই থাকেনা। তবে বিধাননগরের বেআইনি নির্মাণের যে অভিযোগ প্রাক্তন মেয়র করছেন তা জনস্বার্থের মত বিষয়। প্রাক্তন মেয়র জনস্বার্থ মামলায় বিধাননগরের বেআইনি নির্মাণ ভাঙ্গার জন্য আবেদন করতে পারেন। অর্থাৎ কোন নির্দিষ্ট নির্দেশ ছাড়াই প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্তের মামলার নিষ্পত্তি করে দিল আদালত।
advertisement
সল্টলেকে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার লক্ষ্যভেদে নেমেছিলেন সব্যসাচী দত্ত। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সব্যসাচী দত্ত-কে নাকের বদলে নরুণে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে । মেয়র পদ ছেড়েও তিনি চর্চায়। তাঁর করা মামলায়, জরুরি শুনানির প্রয়োজনীয়তা নেই বলে জানিয়েছিলেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। আদালতের সময় নষ্টের জন্য ১১০০০ টাকা জরিমানা নির্দেশও দেয় আদালত। জরিমানা নির্দেশ বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চে চ্যালেঞ্জ করেন সব্যসাচী দত্ত। সোমবার সেই মামলার শুনানি ছিলো। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সব্যসাচী দত্তের মামলা থেকে সরে দাঁড়ায় বিচারপতি দত্তের ডিভিশন বেঞ্চ। মামলা পৌঁছোয় আরেক ডিভিশন বেঞ্চে। সেই মামলার নিষ্পত্তি হল আজ। সল্টলেকে বেআইনি নির্মাণ আটকানোর ধনুকভাঙা পন কার্যকর করতে এখন জনস্বার্থ মামলার পথেই হাঁটতে হবে সব্যসাচী দত্তকে।
পুরনিগম হওয়ার পর বিধান নগরের প্রথম মেয়র তিনি। সল্টলেক, রাজারহাট তার হাতের তালুর মতো চেনা। মেয়র থাকাকালীন ১১টি কাজ বেআইনিভাবে হচ্ছে বলে অভিযোগ ছিল সব্যসাচী বাবুর। ওই ১১টি কাজ বন্ধ করে দেওয়ার নোটিশ দেন তিনি। এরপর বিধাননগর পুরনিগমে রাজনৈতিক দোলাচল শুরু হয়। তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলরদের মধ্যে আড়াআড়ি বিভাজন শুরু হয়ে যায়। তৃণমূল কংগ্রেসের থাকাকালীনই মেয়র পদ ছেড়ে দেন সব্যসাচী দত্ত। নতুন মেয়র হন কৃষ্ণা চক্রবর্তী। কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে প্রাক্তন মেয়র অভিযোগ আনেন, তিনি মেয়র থাকাকালীন বেআইনি কাজ গুলি বন্ধ করার নোটিশ জারি করে বিধাননগর পুরনিগম। নতুন মেয়র আসতেই সেই বেআইনি কাজ গুলি ফের শুরু করছে পুরনিগম। মেয়র পদ চলে গেলেও এখনও সল্টলেকের পুরপিতা সব্যসাচী দত্ত। আবার বিধায়কও বটে। দলবদলের পর তাঁকে ঘিরে অনেক প্রত্যাশা গেরুয়া শিবিরের। দক্ষিণ কলকাতার মত গুরুত্বপূর্ণ আসনে তাঁকে সংগঠন সামলানোর দায়িত্ব সব্যসাচীর কাঁধে। বিধাননগরের বেআইনি নির্মাণ আটকাতে এখন জনস্বার্থ মামলার পথে তিনি হাঁটেন কিনা সেটাই দেখার।
ARNAB HAZRA