অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের প্রশ্ন, ‘আচ্ছে দিন কোথায় গেল? মেক ইন ইন্ডিয়ার গাল ভরা স্লোগানের কী হল - এর বেশি কিছু নয় ৷’ সোমবার, বিধানসভায়, বাজেটে পেশের শুরু থেকেই রাজ্যের নিশানায় কেন্দ্র। কখনও মোদি সরকারকে কটাক্ষ। কখনও বঞ্চনার অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেও একই সুর ৷ বললেন, প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা কেন্দ্রে থেকে বকেয়া। প্রতি বছর ৫০ হাজার কোটি টাকা দেনা শোধ করতে হয়।
advertisement
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, গত লোকসভা ভোটে তৃণমূলের আদিবাসী ভোটব্যাঙ্কের অনেকটাই ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। উত্তরবঙ্গেও তৃণমূলের খালি হাত। সেখানেও পদ্মচাষ। এই পরিস্থিতিতে, রাজনৈতিক জমি পুনরুদ্ধারে মরিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাজেটে তাই তফশিলি জাতি-উপজাতি, চা বাগানের শ্রমিক ও গরিব ভোটব্যাঙ্কের দিকে রাজ্য সরকারের বাড়তি নজর। তাদের জন্য একাধিক প্রকল্পের ঘোষণা।
অমিত মিত্রের দাবি, আগামী ২ বছরে রাজ্যে ৩টি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা হবে ৷এর মধ্যে একটি আদিবাসী এবং আরেকটি তপশিলি জাতি সম্প্রদায়ের জন্য ৷ তপশিলি জাতি ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের বয়স্কদের জন্য মাসে ১ হাজার টাকা করে বার্ধক্য ভাতা ৷
এছাড়াও চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য আগামী ২ বছর কৃষি আয়করে সম্পূর্ণ ছাড়ের ঘোষণা ৷‘চা সুন্দরী’ প্রকল্পে চা শ্রমিকদের জন্য আবাসনের ঘোষণা ৷ ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পকে উৎসাহ দিতে আসছে ‘বাংলাশ্রী’ প্রকল্প ৷ বেকারদের আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করতে ‘কর্মসাথী’ প্রকল্পের ঘোষণা রাজ্য বাজেটে ৷ এছাড়াও, অসংগঠিত শ্রমিকদের PF দিতে বিনামূল্যে ‘সামাজিক সুরক্ষা’ প্রকল্প ৷ যাতে পিএফ-এর পুরো অংশই দেবে রাজ্য সরকার ৷ এখানেই শেষ নয়, ‘হাসির আলো’ প্রকল্পে গরিব মানুষেরা বিনামূল্যে পাবেন বিদ্যুৎ ৷
বিজেপির টার্গেট ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট। তার আগে এ দিন শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, এ বারের বাজেটে উন্নয়নকে অস্ত্র করে তফশিলি জাতি-উপজাতি থেকে শুরু করে উত্তরবঙ্গের চা শ্রমিক, গরিব, বেকার - সকলেরই মন জয়ের চেষ্টা করল তৃণমূল সরকার। যদিও বিরোধীরা কটাক্ষের সুরে বলছে, ঘোষণাই সার। সরকারের হাতে টাকা কোথায়? ভোটের আগে বাজেট ঘিরে এ ভাবেই রাজ্য রাজনীতিতে তরজা তুঙ্গে।