একরাশ শোক বুকে নিয়েও সৈকতের বাবা সরোজ পাল সরাসরি যোগাযোগ করেন মৃতদেহ হাসপাতালে দান করা নিয়ে যে সংগঠন প্রথম থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছে, সেই ' গণদর্পণ ' সংস্থার সঙ্গে। গণদর্পণ সংস্থার মাধ্যমে দ্রুত যোগাযোগ করা হয় বেলগাছিয়ার আরজিকর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সঙ্গে। করোনা আক্রান্ত মৃতদেহের রোগ নির্ণায়ক ময়নাতদন্তের (অটোপসি) জন্য সৈকতের দেহ আরজিকর হাসপাতালে দান করা হয়। হাসপাতালের মর্গে রাখা থাকে তার দেহ।
advertisement
বৃহস্পতিবার বিকেলে সৈকতের দেহের প্যাথলজিক্যাল অটোপসি বা রোগ নির্ণায়ক ময়না তদন্ত করেন ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক গণ।
গণদর্পণ সংস্থার পক্ষে শ্যামল চট্টোপাধ্যায় জানান,' ছেলেকে হারিয়ে যেকোনো বা বাড়ি সব হয় কিন্তু ভাটপাড়ার বাসিন্দা সরোজ পাল যে নজির রাখলেন, তা সত্যিই দেহদান আন্দোলনের কাছে একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত থাকবে। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হওয়ার পর সেই দেহের ময়নাতদন্তের দাবি আমাদের সংস্থা বহুদিন ধরে করে আসছিল।শেষ পর্যন্ত দেহদান আন্দোলনের পথিকৃৎ, গণদর্পণ সংস্থার প্রাণপুরুষ ব্রজ রায় করণা আক্রান্ত হওয়ার পর মারা গেলে তার দেহেই দেশের মধ্যে প্রথম রোগ নির্ণায়ক ময়নাতদন্ত করা হয়।আর সেই ময়না তদন্ত রিপোর্টে দেখা যায় শুধু ফুসফুস নয়, কিডনি পর্যন্ত সংক্রামিত হয়েছিল করোনার কারণে। এরপর এই আরজিকর হাসপাতালে আরও 6 টি করোনা মৃতের দেহের ময়নাতদন্ত হয়। পাশাপাশি এস কে এম হাসপাতালেও করণা আক্রান্ত দুজনের দেহের ময়নাতদন্ত হয়। শুধু করোনা কেন,বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতের দেহের ময়না তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।'
অন্যদিকে বিশেষ পদ্ধতিতে সৈকত পালের দেহের রোগ নির্ণায়ক ময়না তদন্ত করা হবে বলে জানান আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক সোমনাথ দাস। ডক্টর সোমনাথ দাস আরো জানান,' এই রকম দেহদান আমি কোনোদিন দেখিনি। নিঃসন্দেহে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব কঠিন ছিল,কিন্তু বাবা হয়ে শরৎবাবু যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন,তাকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নেই। আগামী দিনে চিকিৎসাবিজ্ঞানের স্বার্থে মানুষ আরো বেশি করে দেহদান করবেন বলে আশা রাখি।'