২০১৯ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের পাশে কাজ করছে প্ৰশান্ত কিশোর। কেন দরকার পড়ল তাঁর কূটবুদ্ধি? প্রশ্নের সপাট উত্তর, ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদিও তো প্রশান্ত কিশোরকে কাজেস লাগিয়েছিলেন। তাঁরা কাজে লাগাতে পারলে আমরা পারব না কোন যুক্তিতে। পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে অভিষেক বললেন, "কোনও সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেন না কেন!"
তৃণমূলের প্রধান সেনাপতি অভিষেক প্রশান্তের গুরুত্ব স্বীকার করেও স্পষ্ট করে দিলেন, উনি দলের ভিতরে নেই। দলের আউটসোর্সিং তত্ত্ব, যা এ নির্বাচন পর্যায়ে বারংবার উঠছে উড়িয়ে দিয়ে অভিষেকের বক্তব্য, "এটা সর্বৈব মিথ্যে। যাঁরা বহু পদ নিয়ে বসেছিলেন, জেলায় জেলায় ছড়ি ঘোরাচ্ছিলেন, তাদের মৌরসিপাট্টা শেষ করা হয়েছে বলে এইটা তাঁরা বলছে।" নাম না নিলেও পরিষ্কার অভিষেকের আঙুল শুভেন্দু অধিকারীর দিকেই।
advertisement
অভিষেকের কথায়, "আগে অবজারভার মডেলে পার্টি চলত। নীচুতলার এখন মডেলটা বদবলেছে। সম্ভাবনাময় যাঁরা, তাদের আমরা কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছি।" অভিষেকের ব্যখ্যায়, এই কারণেই দল থেকে চলে যাওয়া নেতাদের গাত্রদাহ।
অনেকেই বলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ প্রশান্ত কিশোরের। অভিষেক এই দাবিকেও উড়িয়ে দিয়েছেন এদিন, তাঁর দাবি তাঁর কথা নয় নয়, সাতজনের কমিটি থাকে। সৌগত রায়, ফিরহাদ হাকিম, ডেরেক ওব্রায়েন থাকেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বরিষ্ঠ নেতারা রয়েছেন সেই কমিটিতে। ফলে কাজ হয় সকলের মতামতের ভিত্তিতে এবং সুপ্রিমো সর্বোপরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে।
কিন্তু প্রশান্ত কিশোর কেন বরিষ্ঠ নেতাদের মাথার ওপর থাকবেন, হোমটাস্ক দেবেন! অভিষেক ব্যখ্যা দিলেন, প্রশান্ত নয়, দলের ছোটবড় নেতাদের কাজ দেওয়া হয় দল থেকেই, প্রশান্ত কিশোর দেন না। কে দলে কী কাজ করছে সেটা দল দেখে।
এল অডিও টেপের প্রসঙ্গ। অভিষেক পাল্টা তুলে আনলেন, অর্ধসত্য দেখানোর রাজনীতি। প্রশান্ত কিশোরের সুরে সুর মিলিয়েই বললেন, মূল কথার একটা অংশ কেটেছেঁটে দেখিয়েছে বিজেপি। প্রশান্তের সুরেই চাইলেন, যাতে গোটা ভিডিওটাই সামনে আনা হয়।
সারা দেশ প্রশান্ত কিশোর নিয়ে নানা জল্পনায় মেতে। অভিষেকের মুখে প্রশান্ত সংক্রান্ত ব্যখ্যা এর আগে কেউ এত স্পষ্ট ভাবে শোনওননি। এই ব্যখ্যায় যে নতুন নতুন মানে খোঁজা শুরু হবে, নতুন নতুন জল্পনা তৈরি হবে তা বলাই বাহুল্য।
-কমলিকা সেনগুপ্ত