নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, "বিরোধী মতকে শ্রদ্ধা করা, বামফ্রন্টে বাস্তবে গুরুত্বহীন হলেও অনেক শরিক দলকে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়গুলি তাঁর থেকেই শেখার। রাজনীতি ও প্রশাসনিক কাজে ৩৪ বছর ধরে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে যুক্ত থাকা মুখের কথা নয়। এমন একজন মানুষকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে আমি গর্বিত। ভিন্ন রাজনীতির হলেও বিধান রায়ের স্বপ্নপূরণ করেছিলেন জ্যোতি বসু। আজ তাঁর পথ আমাদের পাথেয় হোক।"
advertisement
দুই দশক ধরে মুখ্যমন্ত্রীর পদ অলংকৃত করে রেখেছিলেন জ্যোতি বসু। বিধানচন্দ্র রায়ের পর তিনি দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন যাঁর প্রভাব রাইটার্সের বাইরে এত দূর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। একটা লম্বা সময় বামফ্রন্ট কংগ্রেস-তৃণমূল সব রাজনীতিই আবর্তিত হয়েছে তাকে ঘিরে। রাজ্য রাজনীতিতে তিনি ছিলেন মধ্যমণি, তিনিই ছিলেন কেন্দ্রে। তিনি খ্যাতির শীর্ষে থাকতেই উত্থান অগ্নিকন্যা মমতার। পর্যবেক্ষকরা বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বাংলার রাজনীতির এত বড় চুম্বকে পরিণত হলেন তার সব থেকে বড় কারণ জ্যোতি বসুর পথের বিরোধিতাই। জ্যোতি বসুর নিজেও এক সময়ে বিধানচন্দ্র রায়ের বিরোধিতা করে বঙ্গ রাজনীতির ধ্রুবতারার মতো হয়ে উঠেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিকে তিনি চিনেছিলেন তন্তুতে তন্তুতে। ২০০১ সালে বয়সের কারণে জ্যোতি বসু সরে দাঁড়ালে ক্ষমতায়ন হয় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের । ক্রমেই শরীর ভাঙতে শুরু করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। জ্যোতি বসুর মৃত্যুতে বিমান বসুর কান্না আজও মনে রেখেছে রাজ্যবাসী।
জ্যোতি বসুর চলে যাওয়াটা বাম রাজনীতির অন্দরে যে ব্ল্যাক হোল তৈরি করেছিল তার মাশুলই আজও গুনতে হচ্ছে সিপিএমকে, এমনটাই বলেন অনেকে। ধাক্কা খেতে খেতে আজ বিধানসভায় বামেরা কোথাও নেই। শূন্য দালান, প্রশস্ত বারান্দা তবু বলে যায়, তিনি আছেন, আছেনই। তাঁর চেয়েও দীর্ঘতর তাঁর ছায়া।