#কলকাতা: গত তিন মাসে শহরে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির মতো অপরাধের সংখ্যা যেমন কমেছে, তেমনই কমেছে আরও একটি অপরাধ। সেটি হল মাদকের কারবার। লকডাউনের সৌজন্যে শহরে মাদক পাচার কমেছে, মানছে খোদ লালবাজার।
লকডাউনে রাজ্যের অন্য জায়গার থেকে অনেক বেশি পুলিশি কড়াকড়ি ছিল কলকাতায়। প্রত্যেক মোড়ে নাকা চেকিং, অলগলিতে ঢুকে লকডাউন কার্যকর করানো, এমনকী বিনা প্রয়োজনে কেউ রাস্তায় বেরলে নেওয়া হয়েছে আইনানুগ ব্যবস্থাও। আর এ সবের কারণেই মাদক কারবারিরাও কার্যত বাধ্য হয়েই গৃহবন্দি ছিল। বরাত থাকলেও রাস্তায় বেরোলেই পুলিশি ধরপাকড়ের ভয় ছিল। তার জেরেই তারা মাদক সরবরাহ করতে পারেনি। তার জেরেই কমেছে মাদকের বিক্রি।
advertisement
কলকাতা শহর মাদক পাচারকারীদের কাছে বরাবরই খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখানে কম দামি থেকে বেশি দামি, সব ধরনের মাদকের সারা বছর চাহিদা থাকে। কিন্তু এই সময়ে বাইরে থেকে যে সমস্ত মাদক কলকাতায় আসে সে গুলি যেমন ডেলিভারি হয়নি এজেন্টের কাছে। তেমনই এজেন্টরাও অর্ডার অনুযায়ী কোনওরকম মাদক সরবরাহ করতে পারেনি। সেটাই মাদক পাচার কম হওয়ার অন্যতম কারণ।
আন্তর্জাতিক মাদক বিরোধী দিবসে শুক্রবার কলকাতা পুলিশের তরফে দু’টি সচেতনতামূলক ট্যাবলো বের করা হয়। সূচনা করেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। মাদক মুক্ত হতে কি কি করতে হবে, কি ভাবে পুলিশের সাহায্য মিলবে সবকিছুই ওই ট্যাবলোর মাধ্যমে প্রচার করা হয়। ওই সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান মুরলীধর শর্মার কাছে জানতে চাওয়া হয়, লকডাউনে মাদকের কারবার বেড়েছে বা কমেছে কিনা। তিনি বলেন, "লকডাউন পর্বে মাদকের কারবার বেড়েছে এ রকম কোনও ডেটা আমাদের কাছে এখনই নেই। কিছু কিছু নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা মাদক ধরেছি। পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই হিসেব করে লকডাউন পর্বের আগের সঙ্গে যদি তুলনা করা হয়, তাহলে মাদকের কারবার এই সময়ে অনেক কমেছে। তার অন্যতম কারণ হতে পারে যে, লকডাউনের জন্য মাদক কারবারিরা সে রকম সুযোগ পায়নি।"
এ দিন ওই অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা জানান, শুদ্ধি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৫৯ জন মাদকাশক্ত নেশামুক্ত হয়েছে। মুলস্রোতে ফিরেছে। এই প্রকল্প আরও জোরদার করা হবে।