তিলজলা থানার পুলিশ সূত্রে খবর, ২৪ ডিসেম্বর রাত দু'টো নাগাদ ফিরছিলেন কসবার বাসিন্দা অঞ্জন বিশ্বাস। তিনি ত্রিপুরার বাসিন্দা। আনন্দপুর এবং কসবায় দুটি গেস্ট হাউস চালান তিনি। পাশাপাশি, বাইপাসে একটি জনপ্রিয় বারে ব্যান্ড চালান। অন্যান্য দিনের মতো ঘটনার দিন কসবার বাড়ি ফেরার জন্য গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অনেক্ষন কোনও গাড়ি না পেয়ে শেষ পর্যন্ত সামনে একটি ক্যাব দেখে তাতেই উঠে পড়েন। অভিযোগকারী পুলিশকে জানান, তিনি ওঠার পরে দেখেন চালক-সহ গাড়িতে চারজন রয়েছেন। এরপর তিনি পিছনের সিটে জানালার ধারে বসে একটু এগোতেই, ভিকি নামে এক যুবক জানায়, সে রুবির কাছে নামবে। এমনকি, গাড়ি থেকে নেমে চালক রাজু মাঝিকে টাকাও মিটিয়ে দেয়। এরপরেই ঘটনার মোড় ঘুরে যায়।
advertisement
পুলিশকে অঞ্জন বিশ্বাস জানান, প্রথমে গাড়ি থেকে নেমে গেলেও, আরও একটু এগিয়ে দিতে বলে গাড়িতে উঠে পড়ে ওই যুবক। তাঁকে সরে বসতে বলে। এরপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁকে চেপে ধরে চোখ বেঁধে দেওয়া হয়। অভিযোগ, এরপর শুরু হয় ব্যাপক মারধর। বন্দুকের বাট দিয়ে অঞ্জনকে মারধর করে বলে অভিযোগ। দুষ্কৃতীরা ছিনিয়ে নেয় নগদ ২৫ হাজার টাকা, মোবাইল এবং দুটি এটিএম কার্ড। ভয় দেখিয়ে পাসওয়ার্ড জেনে পাটুলির এটিএম থেকে ৪০ হাজার টাকা তুলে নেয়। এরপর অঞ্জনকে ঢালাই ব্রিজের কাছে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর অঞ্জন বিশ্বাস ২৫ ডিসেম্বর অভিযোগ দায়ের করেন তিলজলা থানায়। তদন্তে নেমে পুলিশ রাস্তার সিসিটিভি খতিয়ে দেখতেই নজরে আসে অপহরণে ব্যবহৃত ক্যাবটির সামনের বেশ খানিকটা অংশে রং চটে রয়েছে। এরপর পুলিশ ক্যাব সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে। ঘটনা দিন কত ক্যাব বাইপাস এলাকায় চলেছে, সেগুলো খুঁজে দেখতেই হদিস মেলে রং চটা ক্যাবটির। কসবা থেকে ক্যাব বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। ক্যাবের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদের করে জানা যায় অভিযুক্ত রাজু মাঝির কথা। পুলিশ এরপর রাজু মাঝিকে গ্রেফতার করে। তাকে জেরা করেই সন্তোষ পোদ্দার, শেখ ভিকি, অর্পণ সেন নামে তিন অভিযুক্তের সন্ধান মেলে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এই গ্যাং মূলত টার্গেট করত বাইপাসের বারগুলিকে। এর আগেএই ধরণের আর কোনও ঘটনা তারা ঘটিয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে তিলজলা থানার পুলিশ। জেরায় অভিযুক্তেরা জানিয়েছে, গাড়ি চালাচ্ছিল রাজু। পাশে বসে ছিল মাস্টারমাইন্ড অর্পণ। আর পিছনে ছিল ভিকি ও সন্তোষ। ধৃতদের জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে এই চক্রে আর কারা জড়িত। এ দিকে, ঘটনার পর থেকে আতঙ্কিত অভিযোগকারী। অঞ্জন বলেন, "এখন রাতে ফিরতেই ভয় করছে। কী জানি যদি আবার এমন ঘটে। আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে।"
ARPITA HAZRA