দিলীপ ঘোষের সঙ্গে পরিচয় কীভাবে?
রিঙ্কু মজুমদার: ২০১৩ থেকে আমি সাংগঠনিক ভাবে বিজেপির সঙ্গে আছি। উনি যখন এমএলএ-এমপি ছিলেন, তখন ওঁর সঙ্গে আমার কখনও কথা হয়নি। আমি তখন ব্লক লেভেলে সংগঠনটা করতাম। ২১-এর ভোটের আগে ইকো পার্কে কথা হয় প্রথম, খুব সাধারণ। এবারের লোকসভা ভোটের সময় একটু কথাবার্তা হয়। খুবই সাধারণ, এসব কিছু মাথায় ছিল না।
advertisement
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি আমার সেটলমেন্টের কথা যখন ভাবি, তখন ওঁকে প্রস্তাব দিই। আমার মাণদণ্ড ছিল, নিউ টাউনের মধ্যে হতে হবে, আমার রাজনৈতিক কেরিয়ারকে সে মেনে নেবে। এরকম নানা কিছু ভাবতে ভাবতে ওঁর কথা মাথায় আসে। উনি আমার নির্বাচনী এলাকার মধ্যেই মোস্ট এলিজেবল ব্যাচেলর। রাজনৈতিক মানুষরা যেমন হন, উনি তেমন না। উনি খুবই ভাল মানুষ। খুবই সৎ, বলিষ্ঠ। এগুলো খুবই ভাল লাগত, তখন ভাবলাম ওঁকে প্রস্তাব দিতে পারি।
আরও পড়ুন: বিয়ের পিঁড়িতে দিলীপ ঘোষ! মায়ের কথাতেই ছাদনাতলায় ‘নাড়ু’, পাত্রী রিঙ্কু কে?
আপনি প্রস্তাব দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কি দিলীপ ঘোষ সমর্থন করেন?
রিঙ্কু মজুমদার: না… না.. না। উনি একটু সময় নিলেন, আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম। প্রথমে উনি আগ্রহ প্রকাশ করেননি। তারপরে ৩ মাস সময় নিয়েছেন, মায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারপর আমাকে জানিয়েছেন।
ইকো পার্কে পরিচয় থেকে ছাদনাতলা…
রিঙ্কু মজুমদার: ওটা তো সাধারণ পরিচয় ছিল। ওঁর নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছি, তখনও এসব ভাবিনি। আমার মাথাতেই আসেনি।
পরিচয় কীভাবে পরিণয়ে পরিণত হল?
রিঙ্কু মজুমদার: সেপ্টেম্বরে যখন নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবছিলাম, তখন নিজের উপযুক্ত একজন মানুষের কথা ভাবতে শুরু করেছিলাম। আমি ১৭ বছর অপেক্ষা করেছি, আমার সমস্ত দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করেছি। এবার আমি আমার কথা ভাবব। তার জন্য একজন উপযুক্ত ব্যক্তির প্রয়োজন ছিল। খুঁজতে গিয়ে আমার মাথায় আসছিল না। পরে আমার মানদণ্ডগুলো মেলাতে গিয়ে দেখলাম, আমার মতোই উনি রাজনীতির মানুষ, ব্যাচেলর, নিউ টাউনের বাসিন্দা এবং আমাকে রাজনীতিতে থাকতে দিতে হবে।
২০১৩ থেকে আমি ব্লক লেভেলে কাজ করি, সেখান থেকে মহিলা মোর্চা পর্যন্ত ধাপে ধাপে পৌঁছই। সেই সময় থেকেই চিনি, তবে খুবই ফর্মাল পরিচয়। উনি যখন হেরে গেলেন, তখন পার্কে আমি বেশি যাওয়া শুরু করি। কারণ, পাওয়ারে থাকাকালীন অনেক মানুষের ভিড় থাকে। পাওয়ারে না থাকাকালীন আমার মনে হয়েছিল, আমার যাওয়া উচিত। মরাল গ্রাউন্ডেই ঘন ঘন যেতাম। মিড সেপ্টেম্বরে আমি বিয়ের প্রস্তাব দিই।
আরও পড়ুন: ঝোড়ো বাতাস-বজ্রবিদ্যুতের তাণ্ডব, কালবৈশাখীর সতর্কতা জারি ৭ জেলায়! আবহাওয়ার বড় খবর
কীভাবে হবে আপনাদের বিয়ে?
রিঙ্কু মজুমদার: হিন্দু রীতি মেনে বিয়ে হবে আমাদের। বিয়ের পর রেজিস্ট্রি হবে। নিউ টাউনে দিলীপ ঘোষের বাড়িতেই দুই পরিবারের মধ্যে বিয়ে হবে। কোনও শো-অফ নয়। খুবই সাধারণ ভাবে আমাদের বিয়ে হবে, বৈদিক মতে।
হঠাৎ দিলীপ ঘোষকেই বেছে নিলেন কেন?
রিঙ্কু মজুমদার: আমার ছেলে আছে, আমার গোটা জীবনটাই আমি ছেলের জন্য সমর্পণ করেছি। ১৭ বছর আমি আমারক সব কাজ করেছি। খুব গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমাকে একটা কনক্লুশানে আসতে হবে। কে সেই উপযুক্ত মানুষ হবেন? ১৭ বছর বয়সে যে ভুল করেছিলাম, সেই ভুল তো এই বয়সে এসে আর করা যাবে না। এমন একজন ডিগনিফায়েড মানুষকে চেয়েছি যাঁর সঙ্গে মেন্টালিটি ম্যাচ করবে। আমার সমাজের প্রতিও একটা দায়বদ্ধতা আছে।
দিলীপ ঘোষ আপনাকে হ্যাঁ বললেন কবে?
রিঙ্কু মজুমদার: আমাদের কথাবার্তা চলছিল। মাস তিনেক উনি সময় নিয়েছেন। নিজের মনকে তৈরি করেছেন। কথার মধ্যে আমাকে জানা-বোঝার চেষ্টা করেছেন। তারপর ওঁর মনে হয়েছে আমি ওঁর উপযুক্ত। তারপর নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে মায়ের সঙ্গে আলোচনা করে জানান। মায়ের জন্য উনি খুবই চিন্তিত। উনি বাইরে গেলে মাকে কে দেখবে?
দিলীপ ঘোষকে সঙ্গী পেয়ে আপনি খুশি?
রিঙ্কু মজুমদার: আমি আপ্লুত, আমি গর্বিত।
(রিপোর্টার– ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী)