সিবিআই-এর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷ জবাব বর্তমান সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের প্রশ্ন ছিল, 'সিবিআই কীভাবে কাজ করে দিলীপদা কী করে জানলেন?' এ দিন পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে সুকান্তর নাম না করেই দিলীপ ঘোষ বলেন, 'ডাক্তারবাবু ভয় পেয়েছেন। কুকুর (ইডি) যদি তার বাড়িতেও পৌছে যায়!'
আরও পড়ুন: আরও বিপাকে অনুব্রত? সিবিআই 'কেস ডাইরি'তে এবার আরও বড় অভিযোগ কেষ্টর বিরুদ্ধে!
advertisement
প্রসঙ্গত, রাজ্যে সারদা, নারদা সিবিআই তদন্ত নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। সেই সিবিআই তদন্ত নিয়ে সরব হন বিজেপি সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রবিবার শহরে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের অনুষ্ঠানের মঞ্চে দিলীপ ঘোষের মন্তব্য ছিল, 'সিবিআই গত কয়েক বছর ধরে এখানে 'সেটিং' করছিল। অর্থ মন্ত্রক সবকিছু বুঝেই ইডি-কে বাংলায় পাঠিয়েছে। সেটিং যারা করেছে এখন তাঁরা বলছে, 'ইডি কেন?' কারণ এই কুকুরটা পোষ মানবে না, বড় কুকুরকে কামড়াবে।'
সিবিআই নিয়ে খোদ দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতির এই মন্তব্যে স্বভাবতই অস্বস্তিতে পড়ে বিজেপি নেতৃত্ব৷ দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যে যে তাঁর এবং দলের সমর্থন নেই, বুঝিয়ে দিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ''দিলীপদা কোথা থেকে বললেন আমাদের জানা নেই। কেন্দ্রীয় এজেন্সি কীভাবে কাজ করে এটা কোনও রাজনৈতিক নেতার পক্ষে জানা সম্ভব নয়। যদি কেউ মন্ত্রী হন তাহলে তাঁর পক্ষে জানা সম্ভব৷ আমাদের কাছে এ ব্যাপারে কোনও তথ্য নেই।'
এ দিন সকালে ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে যান দিলীপ৷ সেখানেই সুকান্ত মজুমদারের এই মন্তব্য নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা৷ জবাবে নিজের অবস্থানে অনড় থেকেই সুকান্তর নাম না নিয়ে দিলীপের ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য, 'কে জানত অনুব্রতর এত টাকা। সিবিআইকে বিশ্বাস করেছিলাম। ভোট পরবর্তী হিংসায় আমার এত কর্মী মারা গিয়েছেন, আদালত সিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছিল। এফআইআরও হয়নি সেভাবে। আমরা ন্যায় পাইনি। আমি সভাপতি থাকার সময় সিবিআই অফিস ঘেরাও করেছিলাম। ইডি ভাল কাজ করেছে। কুকুর বলেছি, কারণ কুকুর বিশ্বস্ত।' এর পরেই ইঙ্গিতপূর্ম ভাবে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'ডাক্তারবাবু ভয় পেয়েছেন। কুকুর যদি তাঁর বাড়িতেও পৌছে যায়।' পেশায় অধ্যাপক সুকান্ত মজুমদারের ডক্টরেট উপাধি রয়েছে৷ ফলে ডাক্তারবাবু বলে দিলীপ নাম না করে তাঁকেই নিশানা করেছেন কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে৷ আবার তৃণমূল সাংসদ পেশায় চিকিৎসক শান্তনু সেনকেও নিশানা করতে পারেন তিনি৷
দিলীপের এই মন্তব্যে যে বিজেপি-র অস্বস্তিও আরও একবার বাড়ল৷ রাজ্য বিজেপি-তে দিলীপ বনাম সুকান্ত শিবিরের দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়৷ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস যখন চাপে, তখন সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার না করে সেই অন্তর্কলহের সমস্যাতেই জেরবার রাজ্য বিজেপি৷