#কলকাতা: নতুন বছরের প্রথম দিন কালীঘাট মন্দিরে ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়। শুধুমাত্র কলকাতা নয়, আশপাশের জেলা এমনকী, ভিন রাজ্যের ভক্তরাও ভিড় জমিয়েছেন কালীঘাট মন্দিরে। পরিবারের মঙ্গল কামনায় কালী দর্শনে এদিন লাখো মানুষের সমাগম।
নতুন বছরের প্রথম দিনের ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কালীঘাট চত্বরে ভিড় জামান ভক্তরা। প্রতিবছরের মতো এবছরও ছবিটা ব্যতিক্রম নয়। মন্দিরের গেট খোলার আগে থেকেই ভক্তেরা লাইনে হাজির। প্রতিবছরের মতো আজও অনেক ভক্তই এসেছেন নতুন বছরের প্রথম দিনটা মা-কে দর্শনের মাধ্যমে সূচনা করার জন্য। দীর্ঘ লাইন। বেলা যত গড়াচ্ছে ততই পুজোর ডালি হাতে ভক্তদের লম্বা লাইনও তত বাড়ছে।
advertisement
কালীঘাট মন্দির কলকাতার একটি প্রসিদ্ধ কালীমন্দির এবং একান্ন শক্তিপীঠের অন্যতম হিন্দু তীর্থক্ষেত্র। এই তীর্থের পীঠদেবী দক্ষিণাকালী এবং ভৈরব বা পীঠরক্ষক দেবতা নকুলেশ্বর। পৌরাণিক কিংবদন্তি অনুসারে, সতীর দেহত্যাগের পর তাঁর ডান পায়ের চারটি (মতান্তরে একটি) আঙুল এই তীর্থে পতিত হয়েছিল।
সত্যযুগে দক্ষ প্রজাপতি স্বগৃহে এক মহাযজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন। সেই যজ্ঞে দেবতা, মুনি-ঋষি, যক্ষ, কিন্নর সকলকে নিমন্ত্রণ করলেও, দক্ষ আপন কন্যা সতী ও জামাতা শিবকে নিমন্ত্রণ জানাননি। সতী বিনা আমন্ত্রণে যজ্ঞস্থলে উপস্থিত হলে, তাঁর সম্মুখেই যক্ষ শিবের নিন্দা করেন। পতিনিন্দা সহ্য করতে না পেরে তৎক্ষণাৎ যজ্ঞকুণ্ডে আত্মবিসর্জন দেন সতী। তখন শিব ক্রুদ্ধ হয়ে সতীর শবদেহ স্কন্ধে নিয়ে বিশ্ব ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে তাণ্ডবনৃত্য শুরু করেন। তাঁকে শান্ত করতে বিশ্বপালক বিষ্ণু আপন সুদর্শন চক্র দিয়ে সতীর দেহ খণ্ডবিখণ্ড করে দেন। সতীর খণ্ডবিখণ্ড দেহের টুকরোগুলি পৃথিবীর নানা স্থানে পতিত হয়েছিল। পৃথিবীতে পড়ামাত্রই এগুলি প্রস্তরখণ্ডে পরিণত হয়। পীঠমালা তন্ত্র অনুযায়ী, সতীর ডান পায়ের চারটি আঙুল পড়েছিল কালীঘাটে।
আজকের বিশেষ দিনে গভীর রাত পর্যন্ত কালীঘাট মন্দিরে পূজার্চনা চলবে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভক্তদের সমাগমে কালীঘাট মন্দির আজ এক মহান তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। সকলের একটাই প্রার্থনা, সবাইকে ভাল রেখো মা।