দিনটা ছিল ৪ নভেম্বর। কিন্তু কালীপুজোর দিনের সেই স্মৃতি কিছুতেই ভুলতে পারছেন না তাঁর নিকটাত্মীয়, পরিজন, বন্ধুরা। গত কালীপুজোয় প্রয়াত হন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন-সহ রাজ্যের চার দফতরের মন্ত্রী, কলকাতার প্রাক্তন মেয়র সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই দীপাবলির সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। অবস্থার অবনতি হলে ICU-তে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। বাড়ির পুজো ছেড়ে মন্ত্রীকে দেখতে তড়িঘড়ি এসএসকেএমে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। রাত ৯.২২ মিনিটে থেমে যায় লড়াই। মৃত্যুকালে মন্ত্রীর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
advertisement
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছিল, দুপুরের খাবার রুটি-তরকারি অর্ডার দিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় হালকা বুকে ব্যথা অনুভব হয়। তারপরে বাথরুমে যান। বাথরুম থেকে ফিরেই ম্যাসিভ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়।এরপর সিপিআর দেওয়া হলেও আর সাড়া দেননি। মন্ত্রীর মৃত্যুতে রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে।
২০২১ সালের ২৪ অক্টোবর সকালে বাড়িতেই অসুস্থ বোধ করেন সুব্রত মুখোপাধ্যায় । তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে কার্ডিওলজি বিভাগে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরেই তাঁকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিল। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সরোজ মণ্ডলের তত্ত্বাবধানে তাঁকে আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন বা বাইপ্যাপ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। অক্সিজেনও দেওয়া হয়। ক্রমশ তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হয়।
আরও পড়ুন- পাকিস্তান জেতায় ভারতের সেমিফাইনাল অঙ্ক কি কঠিন হয়ে গেল? জেনে নিন
প্রসঙ্গত, বাংলার বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর নারদ কাণ্ডে ফিরহাদ হাকিমদের সঙ্গে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও গ্রেফতার হয়েছিলেন। সেই সময়ও তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তখনও এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল ৭৬ বছর বয়সী মন্ত্রীকে। উল্লেখ্য, ষাটের দশকে কংগ্রেসী ঘরানার রাজনীতিতে হাতেখড়ি। শুরু করেছিলেন ছাত্র রাজনীতি দিয়েই। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির সঙ্গেই উত্থান তাঁর। ১৯৭২-১৯৭৭ তথ্য সংস্কৃতি দফতরের মন্ত্রী ছিলেন। ঘনিষ্টভাবে কাজ করেছেন সিদ্ধার্থশংকর রায়ের সঙ্গে। কলকাতার ৩৬তম মেয়র তিনি। ২০০০ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত মেয়র পদে বহাল ছিলেন। ইন্দিরা গান্ধির সঙ্গেও সুব্রত মুখোপাধ্যায় যোগাযোগ ছিল নিবিড়। ইন্দিরা গান্ধি যেদিন মারা যান সেদিন রাজীব গান্ধির পাশে ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজনীতিতে আনার পিছনে চাণক্য বলে যাঁদের মানা হয়, তাঁদের অন্যতম সুব্রত মুখোপাধ্যায়।