এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে বাগবাজার হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র মনোজিৎ যাদবকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে তারই সহপাঠী রানা সিং৷ ঘটনার পর ঘটনাস্থলে থাকা আরও দুই ছাত্রকে পুলিশ আটক করলেও পালিয়ে যায় মূল অভিযুক্ত রানা সিং৷
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত রানা সিং আলমবাজার এলাকার বাসিন্দা৷ এ দিন অভিযুক্তের বাড়িতে গিয়েও কারও খোঁজ পায়নি পুলিশ৷ অভিযুক্তের খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি৷ অভিযুক্ত যে ট্রেন ধরে ভিন রাজ্যে পালানোর চেষ্টা করতে পারে, তা অনুমান করেই হাওড়া, শিয়ালদহের মতো স্টেশনগুলিতে নজরদারি বাড়ানো হয়৷ শেষ পর্যন্ত পরিবার নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার আগেই ধরা পড়ে যায় অভিযুক্ত রানা সিং৷
advertisement
দক্ষিণেশ্বর স্টেশনের এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায়৷ আতঙ্ক ছড়ায় যাত্রীদের মধ্যেও৷ ঘটনাস্থলে যান ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মুরলীধর শর্মা, ডিসি (সাউথ) অনুপম সিং সহ পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা৷
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্কুল থেকে ফেরার সময় মৃত মনোজিৎ যাদব এবং তার বন্ধুরা শ্যামবাজার স্টেশন থেকে দক্ষিণেশ্বর গামী মেট্রোতে উঠেছিল৷ সেই দলে ছিল অভিযুক্ত রানা সিং-ও৷ শ্যামবাজার স্টেশনেই মনোজিৎ এবং রানার মধ্যে কোনও কারণে তুমুল বচসা এবং হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হয়৷ তখন অন্যান্য যাত্রী এবং সহপাঠীরা দু জনকে নিরস্ত করে৷ দক্ষিণেশ্বরে মেট্রো থেকে নামার পর দু জনের মধ্যে ফের গন্ডগোল শুরু হয়৷ স্টেশন থেকে বেরনোর মুখেই পকেট থেকে ধারালো অস্ত্র বের করে বরানগরের এস পি ব্যানার্জী রোডের বাসিন্দা মনোজিতকে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করে অভিযুক্ত রানা সিং৷
দুই ছাত্রের অন্যান্য বন্ধুরা এসে রানাকে আটকানোর আগেই ঘটনাস্থল থেকে পালায় অভিযুক্ত৷ প্রথমে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় মনোজিৎ-কে৷ সেখান থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় ওই ছাত্রের অবস্থার অবনতি হয়৷ বরানগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওই ছাত্রকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা৷ কী নিয়ে গন্ডগোলের জেরে সহপাঠীকে রানা খুন করল, তা জানতে ধৃতকে জেরা শুরু করেছে পুলিশ৷ কীভাবে ওই ছাত্র শ্যামবাজার মেট্রো স্টেশনে আরপিএফ-এর নজরদারি এড়িয়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঢুকে পড়ল, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ এবং মেট্রো কর্তৃপক্ষ৷
সহ প্রতিবেদন- সুবীর দে