সাইক্লোন ইয়াস বাংলায় ঠিক কতটা প্রভাব ফেলবে তাই নিয়ে নানা মত ছিল। তবে শেষমেশ আবহবিদরা হাতেকলমে বুঝিয়ে দেন, সাইক্লোনের অভিমুখ পরিবর্তন হয়েছে। তা উপকূলবর্তী অঞ্চল ছুঁয়ে গেলেও তা মূলত আছড়ে পড়ব ওড়িশার ধামরা বন্দরে। সাইক্লোন আছড়ে পড়ার বহু আগে থেকেই পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতে। তীব্র জলোচ্ছ্বাসের ফলে বেনজির পরিস্থিতি হয় দিঘা মন্দারমনিতে। পূর্ব মেদিনীপুরের খেঁজুরি, নন্দীগ্রাম, কণ্টাই, রামনগর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ক্যানিং, কাকদ্বীপ, ফ্রেজারগঞ্জ, নামখানা, কুলতলি, কচুবেরিয়া, কুলপিতে কার্যত বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। আবহবিদরা জানান, এই জলস্ফীতির কারণ ভরা কোটাল। মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক থেকে জানান জলস্ফীতি হতে পারে আজ বৃহস্পতিবারও। এ বিষয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের পাশাপাশি উপকূল ও নদী তীরবর্তী মানুষজনকে সতর্ক করেন তিনি।
advertisement
আপাত ভাবে দেখা যাচ্ছে, সাইক্লোনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় শুক্রবার থেকে জেলা সফর করবেন। সরেজমিনে পরিস্থিতি পরিদর্শনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে তিনি ক্ষয়ক্ষতির পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করবেন। মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন টাস্কফোর্স তাঁর সঙ্গে থাকবে। মুখ্য সচিব জানিয়েছেন,আগামী ২৮ মে মুখ্যমন্ত্রী বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন আকাশপথে। যে যে এলাকাগুলি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেখানে জায়গায় জায়গায় তিনি প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। প্রথমে তিনি উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ যাবেন । সন্দেশখালি, ধামাখালি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জরিপ করে একটি প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। সেখান থেকে আকাশপথে যাবেন সাগরে। সুন্দরবন এলাকার বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করে গঙ্গাসাগরে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন।
সাগরে বৈঠক শেষে আকাশপথে মুখ্যমন্ত্রী চলে যাবেন পূর্ব মেদিনীপুরে। ইয়াসে ত্রস্ত আরেক জেলায় তিনি প্রথমে নামবেন দিঘায়। সেখানে এলাকা পরিদর্শন করে চলে যাবেন কাঁথিতে। রামনগরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন তিনি। এরপর মুখ্যমন্ত্রী যাবেন এ বছর তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্র নন্দীগ্রামে। এখনও পর্যন্ত সাইক্লোন ধাক্কায় বাংলায় মৃতের সংখ্যা ৪। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য সরকার।
