২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর শিলিগুড়ি পুরসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে সাফল্য পেয়েছিল বামেরা। তারপরই সেই শিলিগুড়ি মডেল রাজ্যের অন্যত্রও ব্যবহার করার কৌশল নিয়েছিল এই দুই দল। কিন্তু তাতে খুব একটা সাড়া পাওয়া যায়নি। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে কর্মী সমর্থকদের মধ্যে আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত মুখ থুবড়ে পড়ে জোট।
advertisement
গত বিধানসভা নির্বাচনে তো ফল আরও শোচনীয়। বাম, কংগ্রেস ও আইএসএফ মিলে তৈরি হয়েছিল সংযুক্ত মোর্চা। এই জোট থেকে শেষ পর্যন্ত আইএসএফের প্রার্থী নওশাদ সিদ্দিকি শুধুমাত্র জিতেছিলেন ভাঙর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে। বাকি একটি আসনও জিততে পারেনি সিপিএম ও কংগ্রেস। শুধুমাত্র শূন্য হয়ে যাওয়া নয়, এই দুই দলের অনেক প্রার্থীর জামানত জব্দ হয়েছিলো।
রাজ্যে বিরোধী দল হিসেবে উঠে আসে বিজেপি। এমন অবস্থায় জোটের উপর আস্থা হারাচ্ছিল এই দুই দলই। বেশ কয়েকটি নির্বাচনে একাই লড়াই করেছিল সিপিএম কংগ্রেস। আর এই একা লড়ে সাফল্যও পাওয়া যাচ্ছিল বলে সিপিএমের একটা অংশ মনে করতে শুরু করেছিল। শান্তিপুর বিধানসভা, খড়দহ বিধানসভা এবং বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে একলা চলো নীতি নেওয়ায় অনেকটা ভাল ফল হয়েছে বলে মনে করে তাঁরা। কারণ এই নির্বাচনগুলিতে সিপিএমের ভোট অনেকটাই বেড়েছিল। বিজেপিকে পিছনে ফেলে শুধু দু' নম্বরে উঠে আসা নয়, শাসক দল তৃণমূলকেও বেশকিছু জায়গায় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেওয়া গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: দলের বড় নেতাদের 'অপকর্ম'কে কটাক্ষ, সাগরদিঘির হারের 'ব্যাখ্যা' দিলেন অপরূপা!
তাই আর কোনও জোটের পথে পা না বাড়ানোর দিকেই দলের মধ্যে মতামত শক্ত হচ্ছিল। এর মধ্যেই মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির উপনির্বাচনে সামনে আসে। সেই নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করার জন্য বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে চিঠি দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সবুজ সংকেতও মেলে আলিমুদ্দিন থেকেও। সিপিএমের কর্মীরা নেমে পড়েন কংগ্রেসের প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের সমর্থনে।
২ মার্চ ফলাফল ঘোষণা হলে দেখা যায় নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন কংগ্রেস প্রার্থী। এর পরে ফের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জোট নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে যায়। তবে জোট বিরোধীদের দাবি, জোট করে বামেদের তুলনায় বেশি লাভবান হয়েছে কংগ্রেসই। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জোট হলে বামেদের ঝুলি ভরবে এর গ্যারান্টি কোথায়?
তবে সাগরদিঘির জয়ে উৎসাহ দেখা গিয়েছে দুই দলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যেই। ফল ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে বিজয় মিছিল বের করেছেন দুই দলের কর্মী সমর্থকরা