টোল দিতে ফাস্টট্যাগ পদ্ধতি চালু হয়েছে আগেই। তবে এখনও টোল প্লাজাগুলিতে অনেকেই টাকায় লেনদেন করেন। আমাদের রাজ্যে গড় হিসেব, ফাস্টট্যাগ ব্যবহার করেন মাত্র ৩০ শতাংশ গাড়ি ব্যবহারকারী। ফলে বিভিন্ন টোল প্লাজায় এখনও চালু আছে টাকার লেনদেন। তাই টোল প্লাজায় সংক্রমণ রুখতে পথ দেখালেন টোল প্লাজার কর্মীরাই। ৩১ নং জাতীয় সড়কে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর সূর্যপুর টোলপ্লাজা। পশ্চিমবঙ্গে প্রথম এই টোল প্লাজাতেই জাতীয় সড়কের ওপরে পিপিই পড়ে কাজ করছেন কর্মীরা। টোলপ্লাজায় কর্মীরা কাজ করছেন পিপিই'র সমস্ত অংশ ব্যবহার করে। যেমন জ্যাকেট স্যুট,গ্লাভস,মাস্ক, চশমা ও জুতোর কভার। তবে তারা না হয় সংক্রমণ রুখতে এই ব্যবস্থা নিলেন, কিন্তু যারা টোল প্লাজায় আসছেন সেই সমস্ত গাড়ি চালক বা যাত্রী তাদের জন্য কি ব্যবস্থা থাকছে। টোল প্লাজায় গিয়ে দেখা গেল। টোল কাউন্টারে গাড়ি এসে দাঁড়ানোর পরেই, গাড়ি বা লরিচালকদেরও দেওয়া হচ্ছে স্যানিটাইজার। তারা আগে হাত স্যানিটাইজ করছেন তার পরে নেওয়া হচ্ছে টোল। যারা ফাস্টট্যাগ ব্যবহার করছেন তাদেরকেও স্যানিটাইজার দেওয়া হচ্ছে।
advertisement
শিলিগুড়িথেকে কলকাতা যাওয়ার পথে মিলবে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক। ডালখোলার কয়েক কিলোমিটার আগেই রয়েছে টোল প্লাজা। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে সূর্যপুর টোলপ্লাজা দিয়ে এখনও চলছে গাড়ি। যেহেতু পণ্যবাহী বহু গাড়ি আসাম থেকে কলকাতা,বিহার বা উত্তরপ্রদেশের মধ্যে চলাচল করছে, তাদের এই টোল পেরিয়েই যাতায়াত করতে হয়। তাই এখানের কর্মীরা সবাই সিদ্ধান্ত নেন তারা কাজ করবেন পিপিই পরে। করোনা সংক্রমণ রুখতে নিজেরাই সচেতন হন কর্মীরা।টোল প্লাজায় করোনা সচেতনতা বোঝাতে তাই টোল প্লাজার কর্মীদের পিপিই ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে।
২০ এপ্রিল থেকে গোটা দেশের জাতীয় সড়কের উপর টোল প্লাজাগুলি খুলে দেওয়া হয়েছে। ভিনরাজ্য থেকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ে বিভিন্ন লরি বা ছোটগাড়ি যাতায়াত করছে। ফলে কে সংক্রামিত তা আগে থেকে জানা নেই। তাই সংক্রমণ রুখতে পিপিই-ই ঢাল। টোলপ্লাজার এক আধিকারিক জানান, আগেই টোল দিতে গাড়িতে ফাস্টট্যাগ পদ্ধতি চালু হয়। ফাস্টট্যাগের বারকোড স্ক্যান করিয়ে টোল দেওয়ার সুবিধা আছে। তবে অনেকেই এখনও টাকায় টোল দেন। টাকা থেকে সংক্রমণ রুখতে পিপিই ও গ্লাভস পরে তাই কাজ করছেন আমাদের টোলপ্লাজার কর্মীরা। টোলপ্লাজাগুলিতে স্যানিটাইজারও ব্যবহার করা হচ্ছে। এই টোল প্লাজার এক কর্মী সৌরভ সরকার জানান, "দেশে এখন করোনা জীবাণু এসেছে। তাই সেফটি নিতে হবে। যাঁরা টাকা দিচ্ছেন, তাঁদের স্যানিটাইজার দিচ্ছি। ফাস্টট্যাগ অনেকে করছেন ব্যবহার, অনেকে করছেনা। তাই আমরাই পিপিই পড়ে নিয়েছি।" বাইরে গরম। তার মধ্যেই আট ঘণ্টা করে ডিউটি করতে হচ্ছে টোল প্লাজার কর্মীদের। কাজ করতে অসুবিধা হলেও সংক্রমণ রুখতে পিপিই-ই ভরসা তাদের কাছে। এমনটাই বলছেন সৌরভ। ইসলামপুর টোলপ্লাজার এই কর্মী জানাচ্ছেন, গ্লাভস পড়ে কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে, পিপিই পরে গরম লাগলেও ফ্যান আছে। তাই দিয়েই ম্যানেজ করার চেষ্টা হচ্ছে।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এখনও টোলপ্লাজার কর্মীদের পিপিই পরে কাজ করার কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি। নিজেদের উদ্যোগেই টোলপ্লাজার কর্মীরা সতর্কতা নিয়েছেন। কর্মীদের উদ্যোগে সাধুবাদ জানিয়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনে সাহায্যের আশ্বাসও মিলেছে। রাজ্যের এন এইচ এ আই'য়ের চিফ জেনারেল ম্যানেজার আর পি সিং জানিয়েছেন, "খুব খুব ভালো উদ্যোগ। বাকি টোল প্লাজাগুলিতেও এটা চালু হলে ভালো। কোনও ধরনের সাহায্য লাগলে আমরা তা দিতে রাজি।" তবে ইসলামপুরের এই টোল প্লাজা করোনা সংক্রমণ রুখতে রোল মডেল এখন বাকি টোল প্লাজার কর্মীদের কাছে।
ABIR GHOSHAL