কাদের প্ররোচনায় এরকম অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হল তা জানতে দমদম থানায় চারটি পৃথক মামলা রুজু হয়েছে বন্দিদের বিরুদ্ধে। দমদম থানার আইসি, দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সুপার এবং দুই সাব ইন্সপেক্টর মামলা রুজু করেছেন। প্রত্যেকটি মামলায় জামিন অযোগ্য ধারা দেওয়া হয়েছে বলে সিআইডি সূত্রে খবর।
রবিবার তদন্তভার নেওয়ার পরেই দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে যান সিআইডি আধিকারিকরা। কয়েকজন বন্দিকে জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে বেশ কয়েকটি নাম যাদের নেতৃত্বে পরিকল্পনা করে হামলা চলে। পুলিশের ওপর হামলা করা হয়। সিআইডি সূত্রে খবর, প্রাথমিকভাবে এরকম ২৫ জনকে তারা চিহ্নিত করতে পেরেছেন। কিন্তু জেলের ভিতরের পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক না হওয়ায় আর কেউ এই ঘটনায় যুক্ত কিনা জানা সম্ভব হয়নি। এক সিআইডি আধিকারিক জানিয়েছেন, "জেলের ভিতর পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সঠিকভাবে তদন্ত করা যাচ্ছে না।" পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর এই ঘটনার পিছনে যুক্ত প্রত্যেককে নতুন চার মামলায় যুক্ত করে গ্রেফতার করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে পুরনো যে মামলাই থাকুক, নতুন করে দায়ের হওয়া গোলমালের ঘটনাতেও পৃথকভাবে তাদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হবে।
advertisement
সিআইডি সূত্রে খবর, বন্দিদের ইট বৃষ্টিতে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী গুরুতর জখম হয়েছেন। সেই ঘটনায় বন্দিদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এছাড়াও সরকারি কাজে বাধা, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা, সরকারি সম্পত্তিতে অগ্নিসংযোগ করার ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। শুধু ইট বৃষ্টি নয়, পুলিশকে লক্ষ্য করে বিচারাধীন বন্দিরা বোমা ছোড়ে বলেও অভিযোগ। এমনকি, তাদের কাছে দেখা গিয়েছিল আগ্নেয়াস্ত্র। পরবর্তীতে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তাই বিস্ফোরক আইন এবং অস্ত্র আইনের জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছে বন্দিদের বিরুদ্ধে। এর পাশাপাশি বিচারাধীন বন্দিদের জন্য যে নির্দিষ্ট আইন থাকে তা লঙ্ঘন করার অভিযোগে ওয়েস্ট বেঙ্গল করেকশনাল সার্ভিস অ্যাক্ট এবং সেন্ট্রাল কালেকশন সার্ভিসেস অ্যাক্ট অনুসারে হয়েছে মামলা।
সিআইডি অফিসারদের প্রশ্ন, বন্দিদের প্রত্যেকদিনই আদালত থেকে সংশোধনাগারে ঢোকানোর সময় তাদের ভাল করে পরীক্ষা করা হয়। তা সত্ত্বেও কীভাবে তাদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র এমনকি বোমা পৌঁছল? সংশোধনাগারের যারা বন্দিদের পরীক্ষা করে ভিতরে নিয়ে যায় তাদের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এই ঘটনায় কারারক্ষীদের কোন গাফিলতি থাকলে তা বরদাস্ত করা হবে না বলেও জানিয়েছে কারা দফতর।
দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে শনিবার থেকে চলা এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির পেছনে কী কী কারণ রয়েছে তা উঠে এসেছে সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে। সেগুলি হল-
প্রথমত, করোনার কারণে আদালতগুলি বন্ধ থাকায় আইনি সাহায্য পাচ্ছিল না বন্দিরা। বিচারাধীন বন্দিদের যারা প্যারোলে মুক্তির আবেদন জানিয়েছিল তা নিয়ে শুনানি হচ্ছিল না। ফলে মুক্তি না মেলায় তৈরি হয়েছিল ক্ষোভ। মামলার বিচার প্রক্রিয়াও পিছিয়ে যাচ্ছিল।