ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রি ফেডারেশন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের সহযোগিতায় ২০১২ সাল থেকে কলকাতায় আন্তর্জাতিক পোলট্রি মেলা শুরু করে। ২০২১ এবং ২০২২ সালে 'কোভিড ১৯'-এর বিপর্যয়ের কারণে 'কলকাতা ইন্টারন্যাশন্যাল পোলট্রি ফেয়ার'-এর আয়োজন করা যায়নি। কিন্তু পুণরায়, এই বছর এই মেলাটি আয়োজিত হচ্ছে সায়েন্স সিটির প্রদর্শনী প্রাঙ্গণে। ‘নবম কলকাতা ইন্টারন্যাশন্যাল পোলট্রি ফেয়ার'-টি ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
advertisement
আরও পড়ুন: রাতভর তল্লাশি, বান্ডিল-বান্ডিল ভর্তি টাকা! বালিগঞ্জে আর যা পেল ইডি, বিরাট চমক
এই মেলার মূল ভাবনা ও লক্ষ্য হচ্ছে, এই রাজ্যে এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি সহ অন্যান্য রাজ্যগুলিতে পোলট্রি উৎপাদন ও শিল্পের উন্নয়ন। এই আন্তর্জাতিক পোলট্রি মেলায় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা হতে আগত ৪০,০০০ পোলট্রি খামারী ও প্রতিনিধি ছাড়াও পোলট্রি শিল্পের সর্বাধুনিক উদ্ভাবনা ও বিকাশ বিষয়ে জানার জন্য উপস্থিত হবেন দেশের বিভিন্ন রাজ্য ও সংলগ্ন দেশগুলি হতে বহু পোলট্রি উৎপাদক ও প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। পোলট্রি উৎপাদক ও খামারীরা ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রখ্যাত পোলট্রি ব্যক্তিত্ব, প্রযুক্তিবিদ বক্তা ও পোলট্রি উৎপাদকগণ সহ প্রতিবেশী দেশগুলি যেমন, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, নাইজেরিয়া, মায়ানমার প্রভৃতি থেকেও এই মেলায় অংশগ্রহণ করবেন। আয়োজকদের আশা, এই বছর মেলায় ভারত ছাড়াও আরও বেশি সংখ্যক আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণকারী স্টল থাকবে । সব মিলিয়ে ১৫০ টিরও বেশি স্টল থাকবে এই মেলায়।
আরও পড়ুন: 'মুখরক্ষা' করতেই এমন করলেন শুভেন্দুরা? রাজ্যপালের ভাষণে বিজেপির স্ট্র্যাটেজি নিয়ে প্রশ্ন
৯ ফেব্রুয়ারী, আজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ত্রিপুরার একটি বিখ্যাত নৃত্য “হোজাগিরি নৃত্য” ‘রিয়াং ড্যান্স ট্রুপ' দ্বারা পরিবেশিত হবে। মেলায় থাকছে আলোচনাচক্র । সারাদিন ব্যাপী ওই আলোচনাচক্রটি পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত হবে ১০ ফেব্রুয়ারি। আলোচনাচক্রে পোলট্রি উৎপাদন, শিল্প ও প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়গুলিই আলোচিত হবে। ওই আলোচনাচক্রে দেশের বিভিন্ন সংস্থার প্রযুক্তিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য পেশ করবেন। বিভিন্ন প্রাণী বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কেন্দ্রীয় পশুপালন কমিশনার, ভারতীয় কৃষি গবেষণা সংস্থার প্রযুক্তিবিদ ও বিশেষজ্ঞগণ, রাজ্য প্রাণীসম্পদ দফতরের অধিকর্ত্তা এবং বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞগণ ওই আলোচনাচক্রে অংশগ্রহণ করবেন। ওই আলোচনাচক্রে সর্বাধুনিক পোলট্রি পরিচালন ব্যবস্থা, জৈব নিরাপত্তা, বর্জ্য পণ্য ব্যবস্থাপণা সহ সকল বিষয়গুলিই আলোচিত হবে।
এই পোলট্রি মেলায় একটি ‘স্টুডেন্ট জোন' রয়েছে, যেটি মূলত স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য। পোলট্রি বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদগণ এবং রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞানের অধ্যাপকগণ ছাত্রদের পোলট্রি সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষিত করবেন, যা ভবিষ্যতে ছাত্র-ছাত্রিদের এই শিল্পের উদ্যোক্তা হতে উৎসাহিত করতে পারে। পোলট্রি শিল্পে জ্ঞান এবং আধুনিক প্রযুক্তির প্রচারের জন্য, এই বছর, “নোভাকন” সম্মেলন চালু করা হচ্ছে । উত্তর পূর্বাঞ্চলের সহ আশেপাশের রাজ্যগুলির পোলট্রি অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে আলোচনা করে কিভাবে পোল্ট্রী শিল্পকে আরও লাভজনকভাবে উন্নত করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হবে। এইজন্য ইস্টার্ন ইন্ডিয়া পোলট্রি ডেভেলপমেন্ট ফোরাম গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মদন মোহন মাইতি , সহ সভাপতি রাধেশ্যাম রায় সহ অন্যান্যরা জানান, অবিলম্বে উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন পোলট্রি সংগঠণগুলিকে একত্রিত করার চেষ্টা চলছে। যে পরিস্থিতি চলছে,তাতে আগামীদিনে অনেক পোলট্রি খামারী এই ব্যবসা থেকে সরে যাবে। অবিলম্বে কেন্দ্র রাজ্য উভয় সরকারকেই পোলট্রি শিল্পের পুনরুজ্জীবনের জন্য সচেষ্ট হওয়ার দাবিও তোলেন তাঁরা।