সিইএসসি-র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘‘আমাদের শহর এক অভাবনীয় তাপপ্রবাহজনিত পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে৷ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে তাপমাত্রা৷ গত কয়েক বছর ধরে আমরা এই শহরের বিদ্যুৎ চাহিদার যোগান দিয়ে চলেছি৷ তার মধ্যে আছে গত ১৬ জুনের ২৬০৬ মেগাওয়াটের সাম্প্রতিক সর্বোচ্চ চাহিদাও৷’’ সংস্থার আবেদনে স্পষ্ট, এই বছরের গরমে কলকাতাবাসীর বিদ্যুৎ চাহিদা ছাপিয়ে গিয়েছে সাম্প্রতিক অতীতের সব রেকর্ড৷ এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ আবেদন করেছে সিইএসসি৷ বাণিজ্যিক এই সংস্থার কথায়, ‘‘আমাদের গ্রাহকদের কাছে আবেদন করছি যাতে তাঁরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্রের পরিমিত ব্যবহার করেন এবং অনুমোদিত বিদ্যুতের সীমারেখার মধ্যেই বিদ্যুতের চাহিদা নির্ধারিত রাখেন৷ এর ফলে আমাদের পক্ষে চূড়ান্ত ওভারলোডিংয়ের সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে৷ আপনাকে এবং আপনার এলাকায় বিদ্যুতের যোগানের ক্ষেত্রেও বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষা করতে পারব৷’’
advertisement
প্রসঙ্গত গত দু’মাসের বেশি সময় ধরে গরমে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে খলনায়ক হিসেবে বার বার উঠে এসেছে বাতানুকূল যন্ত্রের যথেচ্ছ ব্যবহার৷ অভিযোগ, অনেকেই বাড়িতে এসি মেশিন বসালেও তা নিয়ম মেনে সংস্থাকে জানাচ্ছেন না। এর ফলে কোনও এলাকায় বিদ্যুতের যে পরিমাণ ‘লোড’ ঠিক করা রয়েছে তার চেয়ে বেশি হচ্ছে ব্যবহার। আর তাতেই নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করলেই এলাকায় বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। নিয়ম না মানা এই গ্রাহকদের জন্য দুর্ভোগের মাশুল দিতে হচ্ছে নিয়ম পালন করা গ্রাহকদেরও৷ দীর্ঘ দিন পর ফের ফিরে এসেছে লোডশেডিংয়ের অসহনীয় অভিজ্ঞতা৷
আরও পড়ুন : দিনে কাজ, রাতে পড়া, NEET-এ বাজিমাত করে ডাক্তার হওয়ার পথে কাশ্মীরের দিনমজুর কিশোর
আরও পড়ুন : সিইএসসি-র ইতিহাসে সর্বকালীন রেকর্ড! তীব্র দাবদাহে আকাশছোঁয়া বিদ্যুতের চাহিদা, বিঘ্ন লোডশেডিংয়েও
এর আগেও সিইএসসি-র তরফে আবেদন করা হয়েছে নিয়ম মেনে, তাদের জানিয়ে এসি লাগিয়ে ব্যবহার করার জন্য৷ কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে মার্চ মাস থেকে শুরু করে যত এসি বিক্রি হয়েছে কলকাতা শহরে, তার তুলনায় নামমাত্র আবেদন জমা পড়েছে সিইএসসি-র কাছে৷ পাশাপাশি গরমের দোসর হিসেবে থেকেই গিয়েছে লোডশেডিং-এর দুর্ভোগ৷ সাধারণ মানুষের কাছে যা ‘লোডশেডিং’, বিশেষজ্ঞদের কাছে সেটাই ‘ফিউজিং’৷ অর্থাৎ নির্দিষ্ট সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পর আপনাআপনি পরিষেবা স্তব্ধ হয়ে যাওয়া৷ কিন্তু নাম যেটাই হোক না কেন, কষ্টের তীব্রতা একই থাকে৷ তাই বৃষ্টি আসার পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিপর্যয় নিয়ন্ত্রিত হওয়ার জন্যেও কলকাতাবাসীর চাতক-প্রতীক্ষা চলছে৷