TRENDING:

ডেলিভারির পর থেকেই যোনি থেকে প্রবল রক্তপাতে জেরবার; সদ্য প্রসূতিকে নতুন জীবন দিল কলকাতার হাসপাতাল

Last Updated:

হাসপাতাল সূত্রে খবর, মাস দুয়েক আগেই ওই তরুণীর সি-সেকশন ডেলিভারি হয়েছে। আর তার পর থেকেই তাঁর যোনি থেকে রক্তপাত হচ্ছিল।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
কলকাতা: মাত্র দু’মাস আগেই মা  হয়েছিলেন বছর সাতাশের তরুণী। তার পর থেকেই শুরু হয় বিপত্তি। যোনি থেকে রক্তপাতের সমস্যায় জেরবার ওই সদ্য প্রসূতিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। ফলে নামছিল হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও। সেই গুরুতর অবস্থা থেকে নতুন মায়ের জীবন রক্ষা করে নজির গড়ল কলকাতার এক হাসপাতাল ৷
ডেলিভারির পর থেকেই যোনি থেকে প্রবল রক্তপাতে জেরবার; সদ্য প্রসূতিকে নতুন জীবন দিল কলকাতার হাসপাতাল
ডেলিভারির পর থেকেই যোনি থেকে প্রবল রক্তপাতে জেরবার; সদ্য প্রসূতিকে নতুন জীবন দিল কলকাতার হাসপাতাল
advertisement

ঠিক কী ঘটেছিল। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মাস দুয়েক আগেই ওই তরুণীর সি-সেকশন ডেলিভারি হয়েছে। আর তার পর থেকেই তাঁর যোনি থেকে রক্তপাত হচ্ছিল। প্রবল রক্তপাত শুরু হওয়ার পরে তিনি আসেন সিএমআরআই হাসপাতালে। জানা যায়, ক্রমাগত রক্তপাতের জেরে তাঁর হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গিয়েছে। চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি জানান যে, ওই সদ্য প্রসূতিকে হিস্টেরেক্টোমি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। বাদ দিতে হবে জরায়ুটাই। সব থেকে বড় কথা হল, এই গোটা প্রক্রিয়াটার জন্য ওই মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি হতেই হত। এক দিকে ঘরে সদ্যোজাত সন্তান এবং তার দেখভাল, আবার অন্য দিকে দুই মাস সময়ের মধ্যে দু’টো বড় বড় অস্ত্রোপচার - সবটাই যেন একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল ওই তরুণীর কাছে। আর একটা বিষয় ছিল, আর সেটা হল - মাত্র ২৭ বছর বয়সেই জরায়ু বাদ চলে যাওয়াটাও তরুণীর কাছে খুব একটা ভাল বিকল্পও ছিল না। এমতাবস্থায় কী করবেন, ভেবে না-পেয়ে ওই তরুণী সিএমআরআই-এর ইন্টারভেনশন ও এন্ডো ভাস্কুলার রেডিওলজিস্ট ডা. অভীক ভট্টাচার্যের কাছে উপস্থিত হন।

advertisement

আরও পড়ুন- আরও নামল পারদ, চলতি সপ্তাহে জমিয়ে শীতের পর্ব

ওই রোগিণীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন ডা. অভীক ভট্টাচার্য। তিনি বুঝতে পারেন যে, এটা যেহেতু সি-সেকশন ছিল, তাই জরায়ুতে প্লাসেন্টা অথবা অন্য কোনও কিছুই পাওয়া যাবে না। এর পর রোগিণীর আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করে রিপোর্টে দেখা যায় যে, ইউটেরাইন ক্যাভিটির ভিতরে একটি টিউমার রয়েছে। আর এই কারণেই ক্রমাগত রক্তপাত হচ্ছিল তাঁর। ফলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে ওই তরুণীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এটা একটা অস্বাভাবিক এবং বিরল ক্লিনিক্যাল ঘটনা। সাধারণত ডেলিভারির সময় জরায়ুর সঙ্গে আটকে থাকা গোটা প্লাসেন্টাই বেরিয়ে আসে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশকগত ত্রুটির কারণে তা ইউটেরাইন পেশির ভিতরে চলে যায় এবং ইউটেরাসের প্রাচীরে আটকে যায়। যার ফলে প্রবল রক্তপাত শুরু হচ্ছিল। এর পর ডা. ভট্টাচার্য ওই তরুণীকে গোটা বিষয়টি বোঝান এবং জানান যে, সিএমআরআই-এর স্টেট অফ দ্য আর্ট অ্যাডভান্সড ক্যাথ ল্যাবে ইউটেরাইন আর্টারি এম্বোলাইজেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সি-সেকশন পরবর্তী এই জটিল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

advertisement

আরও পড়ুন- পেল্লাই আকারের রসগোল্লা ! ১ পিসের ওজনই প্রায় ২ কেজি, দেখুন ছবি

গোটা প্রক্রিয়াটি ডাক্তারবাবুর থেকে বুঝে নিয়ে মহিলা ফের আশায় বুক বাঁধেন। আর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। তিনি বুঝতে পারেন যে, বিরল এই সমস্যার জন্য তাঁকে আবার ছুরি-কাঁচির মধ্যে দিয়ে যেতে হবে না। এর পর নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে উচ্ছ্বসিত ওই রোগিণী জানান, “চিকিৎসা বিজ্ঞানের এমন উন্নতি দেখে আমি সত্যিই অবাক হয়ে গিয়েছি। হিস্টেরোক্টোমির মতো বেদনাদায়ক সার্জিক্যাল প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আমায় যেতে হয়নি। যে দিন টিউমারটা বাদ গেল, সে-দিনই আমি আমার বাড়িতে মেয়ের কাছে ফিরে যেতে পেরেছি। আর দু’মাস ধরে যে রক্তপাতের সমস্যায় জেরবার হয়েছি, সেটা ওই দিনই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বিশেষজ্ঞ এবং দক্ষ ডাক্তারবাবুদের কাছে আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ। আর সব থেকে বড় কথা হল, নিউক্লিয়ার পরিবারে দুমাসের ছোট্ট সন্তানকে নিয়ে যে কী সমস্যায় পড়েছিলাম, তা বলার নয়। তবে ডাক্তারবাবুদের আত্মবিশাস এবং সমর্থন আমাকে সাহস জুগিয়েছে।”

advertisement

আরও পড়ুন-পেল্লাই আকারের রসগোল্লা ! ১ পিসের ওজনই প্রায় ২ কেজি, দেখুন ছবি

এই ঘটনার কথা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে ডা. অভীক ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের হাসপাতালে মাঝেমধ্যেই আমরা ইটেরাইন আর্টারি এম্বোলাইজেশন করে থাকি। কিন্তু সি-সেকশন পরবর্তী দুই মাসের মধ্যেই ইউটেরাইন টিউমার নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন ওই তরুণী। বুঝতে পারি যে, এটা খুবই বিরল একটি অবস্থা। সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমরা গোটা প্রক্রিয়াটি সম্পাদন করি। তার ফলও আসে দুর্দান্ত। দারুন পরিকাঠামো এবং হাই-এন্ড ডিজিটাল ইমেজিংয়ের কারণে বিষয়টা পরিষ্কার ভাবে সম্পাদন হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রোগিণীকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। আসলে ছুরি-কাঁচি এবং ব্যথা-বেদনা ছাড়া এমন প্রক্রিয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ারও ঝক্কি থাকে না। এই কারণেই মিনিমাল ইনভেসিভ প্রক্রিয়া আগামী দশকের অস্ত্রোপচার হিসেবে প্রসিদ্ধ হবে।”

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
পুরীর রথ এবার রঘুনাথপুরে, থিমে মন কাড়ছে আপার বেনিয়াসোলের দুর্গাপুজো মণ্ডপ
আরও দেখুন

অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে বড়সড় আমূল পরিবর্তন ঘটানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে এন্ডোভাস্কুলার এবং ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজি। ইটেরাইন ফাইব্রয়েড, ভ্যারিকোজ ভেইন, পেরিফেরাল আর্টেরিয়াল ডিজিজ এবং এই ধরনের আরও নানা রোগের এই স্পেশালিটির মাধ্যমে চিকিৎসা করা অত্যন্ত সহজ হয়ে উঠবে। যার ফলও আসবে দুর্দান্ত।

বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
ডেলিভারির পর থেকেই যোনি থেকে প্রবল রক্তপাতে জেরবার; সদ্য প্রসূতিকে নতুন জীবন দিল কলকাতার হাসপাতাল
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল