কানাডা: কানাডা নিবাসী স্বামী ও এদেশে থাকা স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহের জেরে জন্মসূত্রে কানাডার নাগরিক ভারতীয় বংশোদ্ভূত পাঁচ বছরের শিশুকন্যার অভিভাবকত্ব ও ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ কলকাতা হাইকোর্টের। সন্তানের কল্যাণের স্বার্থে দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি শব্বর রাশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। সমস্যার সমাধান সূত্র খুঁজতে এজলাস থেকেই স্বামী স্ত্রীকে ফোনে কথা বলার অনুমতি দেয় আদালত।
advertisement
কোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে বিয়ে হয় ওই বাঙালি দম্পতির। পরে কর্মসুত্রে দুজনেই কানাডাতে চলে যান। ২০২০ সালে কন্যাসন্তানের জন্ম। কানাডায় জন্মসূত্রে ওই দেশের নাগরিকত্ব পায় শিশুটি। ইতিমধ্যে পূর্বের নাগরিকত্বের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কানাডার নাগরিকত্ব পান স্বামীও। দাম্পত্য কলহের জেরে শিশুকন্যাকে নিয়ে ভারতে চলে আসেন স্ত্রী। অন্যদিকে কানাডার অন্টারিও আদালতে সন্তানের অভিভাবকত্ব চেয়ে এবং স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন স্বামী। সেই মামলায় ২০২৫ সালের ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সন্তানকে কানাডা ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয় অন্টারিও আদালত। স্ত্রী সেই নির্দেশ অমান্য করায় কলকাতা হাইকোর্টেও মামলা করেন স্বামী।
এ দিন মামলার শুনানিতে পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন স্বামী ও স্ত্রীর আইনজীবীরা। তবে সেই অভিযোগের কেন্দ্রে ঢুকতে রাজি হয়নি কোর্ট। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি শব্বর রাশিদির ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, শিশুসন্তানের কল্যাণের স্বার্থে পারস্পরিক যোগাযোগের মাধ্যমে সমাধান সূত্র খোঁজার উদ্যোগ নিক স্বামী ও স্ত্রী। তবে সন্তান ও তার মা কানাডায় ফিরে গেলে, তাঁদের নিরাপত্তা ও ভরণপোষণের বিষয়ে স্বামীকে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার জন্য বেশ কিছু প্রস্তাব দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।
ডিভিশন বেঞ্চের প্রস্তাব – স্ত্রী ও সন্তানকে কানাডায় আলাদা থাকার ব্যবস্থা করতে হবে স্বামীকে, তাঁদের সব খরচ বহন করতে হবে, স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সন্তানের সঙ্গে অভিভাবকত্ব ও সাক্ষাতের সময় নির্ধারণ করতে হবে এবং স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া সীমিত সময়ের বেশি থাকতে পারবেন না স্বামী।
এর পাশাপাশি অন্টারিও আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলার বিষয়ে নির্দিষ্ট সমাধান সূত্রে পৌঁছতে হবে উভয় পক্ষকে। মঙ্গলবার কোনও নির্দেশ না দিলেও উভয়পক্ষের আইনজীবীদের সহযোগিতায় স্বামী ও স্ত্রীকে ফোন বা ভিডিও কলের মাধ্যমে প্রতিদিন যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেয় হাইকোর্ট। কোর্টের আরও মন্তব্য, বাবাকে সন্তানের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ করে দেবেন স্ত্রীও। এই মামলার পরবর্তী শুনানি জানুয়ারিতে।
