হাইকোর্টের এই রায়ের পর স্বাভাবিক কারণেই স্বস্তিতে শাসক তৃণমূল শিবির। এই জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে এর আগের দিন নির্দিষ্টভাবে ভবানীপুরের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ক্ষোভের সঙ্গে বলেছিলেন, 'একটি আসনের জন্যই সংবিধান আর আইনের এত বাধ্যবাধকতা? একজন ব্যক্তি নির্বাচনে জিতে পদত্যাগ করবেন, আর তাঁর জায়গায় আরেকজন ভোটে দাঁড়াবেন!'
এখানেই শেষ নয়, নির্বাচন কমিশনের কাছে হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিল, 'একটি উপনির্বাচন করতে কত টাকা খরচ হয় কমিশনের?' সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিলেন কমিশনের আইনজীবী। তখন মামলাকারীর আইনজীবীরাই জানিয়েছিলেন, উপনির্বাচন করতেও কোটি কোটি টাকা খরচ হয়। সেই প্রসঙ্গ তুলেও হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তুলেছিলেন, 'একটা উপনির্বাচনের জন্য জনগণের করের টাকা কেন খরচ করা হবে? আদালতকে কেন কোনও উত্তর দিতে পারছে না নির্বাচন কমিশন?' এই প্রসঙ্গেই আদালত জানিয়েছিল, এই উপনির্বাচনের খরচ কোনওভাবেই অন্য পন্থায় ব্যবস্থা করা যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তবে, এদিনের রায়ে সেই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি হাইকোর্ট।
advertisement
আরও পড়ুন: পুজো মিটলেই ফের ভোট বাংলায়, বাকি চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ কমিশনের
প্রসঙ্গত, ভবানীপুর উপনির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশন যে বিবৃতি জারি করেছিল, তার ৬ ও ৭ নম্বর অনুচ্ছেদে লেখা হয়েছিল, ‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি বর্তমানে সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে। পশ্চিমবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতিও ভোটের ক্ষেত্রে কোনও প্রভাব ফেলবে না। ভারতীয় সংবিধানের ১৬৪ (৪) ধারায় একজন মন্ত্রী যদি বিধানসভার সদস্য না হন, সেক্ষেত্রে ভোটের ফল প্রকাশের ৬ মাস পর তাঁর মন্ত্রী পদ চলে যায়। আর সেই পদে সর্বোচ্চ পদাধিকারী নিয়োগ না হলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হতে পারে রাজ্যে।’ মামলাকারী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক এই বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন। নির্বাচন বন্ধ করার কোনও আর্জি তাঁর নেই জানিয়ে তিনি দাবি করেছিলেন, ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচন না হলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে বলে রাজ্যের মুখ্যসচিবের সুপারিশের উল্লেখ নির্বাচন কমিশনকে প্রেস বিবৃতি থেকে বাদ দিতে হবে। সেই বিষয়ে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, 'মুখ্যসচিব ভুল করেছেন।'
