রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতাদের এবার কার্যত হুঁশিয়ারি দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। নেতাদের নানা বিষয়ে আদালত জড়িয়ে মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন আজ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আদালতের বিচারাধীন বিষয়ে আলটপকা মন্তব্য করা নিয়ে নেতাদের একরকম ভর্ৎসনা হাইকোর্টের। কোনও নির্দিষ্ট নেতা বা নেত্রীর নাম না করে 'বিশিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতা' বলে তাঁর এজলাসে শুক্রবার রীতিমতো কড়া সতর্কবার্তা দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
advertisement
সম্প্রতি একটি প্রকাশ্য জনসভায় "শিক্ষকপদে ১৮০০০ চাকরি রেডি, আদালতের কারণে দেওয়া যাচ্ছে না" এমন মন্তন্য করেন বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এই মর্মেই আজ একটি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের উদ্দেশ্যে সতর্কবার্তা দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একইসঙ্গে রাজ্যের শিক্ষা সচিবকে এই চাকরি সংক্রান্ত নথি সবিস্তারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।
১৮০০০ শূন্যপদ নিয়ে শিক্ষা দফতরের রিপোর্টে বলা হয়, "১৮০০০ এর বেশি শূন্যপদ রয়েছে। নবম - দশমে শূন্যপদ রয়েছে ১৩৮৪২, একাদশ - দ্বাদশে শূন্যপদ রয়েছে- ৫৫২৭, হেড মাস্টার পদে শূন্যপদ রয়েছে - ২৩২৫ টি, প্রাথমিকে শূন্যপদ রয়েছে - ৩৯৩৬ , কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। আদালতের নির্দেশের কারণে নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ এবং হেডমাস্টার পদে কোন নিয়োগপ্রক্রিয়া বন্ধ নেই।"
এই প্রসঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, "এত শূন্য পদ থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ হচ্ছে না কেন? রাজ্যের একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তি বিভিন্ন সময়ে বলছেন যে আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে নিয়োগ করা যাচ্ছে না। কিন্তু প্রাথমিকের ৩৯৩৬ শূন্যপদে আদালতের নিষেধাজ্ঞা নেই। কেন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে না সেটা বোধগম্য নয়।"
কেন ৩৯৩৬ টি শূন্যপদে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে না তা হলফনামা দিয়ে জানাবেন স্কুল শিক্ষা দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টরেট। আগামী ১৭ ই আগস্টের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও হেডমাস্টার স্তরে নিয়োগে আদালতের কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। ১৮০০০ এর বেশি শূন্যপদ রয়েছে। এগুলিতে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করা যেতে পারে। কোনও আইনি বাধা নেই। রাজ্যের গুরুত্তপূর্ণ ব্যক্তিরা কেন আদালতকে নিয়োগে বাধা হিসাবে দেখাতে চাইছেন?" এই ধরনের মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সচেতন থাকা প্রয়োজন। আদালতকে রাজনৈতিক আঙিনায় টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আদালত উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।
