আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হওয়া অশোক কুমার সিংয়ের পরিবারের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের আবেদনে এখনই সায় নেই হাইকোর্টের। তবে পরিবারকে মামলায় যুক্ত করা হয়নি এখনও পর্যন্ত। তারা মামলায় যুক্ত হয়ে তাদের বক্তব্য আদালতে জানাতে পারবে বলে জানিয়েছে আদালত। তবে কীভাবে অশোক কুমার সিংয়ের মস্তিষ্ক রক্তক্ষরণ হল, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে আদালতে দাবি করেন আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল৷ থানার সর্বত্র সিসিটিভি ফুটেজ ছিল কি না, তাও নিশ্চিত করার দাবি জানান প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল৷
advertisement
এ দিন হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলেই অশোক কুমার সিংয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের আইনজীবী আরও দাবি করেন, থানায় গিয়ে সম্ভবত নার্ভাস হয়ে পড়েছিলেন অশোক কুমার সিং।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, পরিবারকে এ বিষয়ে হলফনামা দিয়ে নিজেদের বক্তব্য আদালতে জমা দিতে হবে। তার পরেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে আদালত। এর পাশাপাশি , আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের পক্ষ থেকে। আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক হয়েছে । শুক্রবার কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে এই মামলার কেস ডায়েরি এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়।
প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ শুক্রবার জানায়, থানার সিসিটিভি ফুটেজ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার দায় নিতে হবে পুলিশকেই। পুলিশ কমিশনারকেই এই ফুটেজ সংরক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে ফুটেজের ফরেনসিক পরীক্ষার দাবি গ্রাহ্য করা হয়নি আদালতের পক্ষ থেকে।
বুধবার সন্ধ্যের পরে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মধ্য কলকাতা। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সামনের রাস্তা দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ করে রাখেন মৃতের বিক্ষুব্ধ পরিজনেরা। সেদিন রাতেই মেডিক্যাল কলেজের সামনে উপস্থিত হয়ে ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানান বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। পাশাপাশি দেহের ময়না তদন্ত যাতে কোনওভাবে রাজ্যের কোনও হাসপাতালে না হয় সেই বিষয় সুনিশ্চিত করার দাবি জানান। কম্যান্ড বা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকা কোনও হাসপাতালে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের দাবি উঠলেও, সেই দাবি ধোপে টেকেনি আদালতে।
শুক্রবার আদালতের নির্দেশের পর এসএসকেএম হাসপাতালের মর্গে দেহ স্থানান্তর করার নির্দেশ দেওয়া হয় আদালতের পক্ষ থেকে। পরিবার সূত্রের খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় দেহ তুলে দেওয়ার কথা রয়েছে তাদের হাতে। পরবর্তী শুনানির দিন পরিবারের আইনজীবীরা সংরক্ষিত ফুটেজ দেখার আবেদন জানাবেন আদালতের কাছে।