বছর দশেক আগে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী কুমকুম পাল (পরিবর্তিত নাম) সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে সুবীর মণ্ডলের। বিএসএফ জওয়ান সুবীর মণ্ডল। কুমকুম বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করার অভিযোগ এনে সুবীরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। সুবীরের বিরুদ্ধে শুরু হয় তদন্ত। ২০২০ সালে অবশেষে সুবীর কুমকুমকে বিয়ে করেন। কুমকুমের আইনজীবী সুস্নিগ্ধ ভট্টাচার্যের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাঁর উপর অত্যাচার শুরু করেন সুবীর। তাঁর বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের (৪৯৮ ধারায়) অভিযোগও দায়ের হয় (Calcutta High Court)।
advertisement
আরও পড়ুন-মেট্রোর পরে এবার গঙ্গার নীচ দিয়ে ছুটবে গাড়ি ! টানেল তৈরি হচ্ছে কলকাতায়
অভিযোগ তুলে নেওয়ার দাবিতে নির্যাতনের মাত্রা ক্রমশ বাড়তে থাকে। ফলে ফের সাক্ষীকে প্রভাবিত করা (১৯৫ ধারা) অভিযোগ দায়ের হয় সুবীরের বিরুদ্ধে। সুবীর নিম্ন আদালত থেকে আগাম জামিন পান। সেই জামিন খারিজের আবেদন নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কুমকুম।কুমকুমের এই আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট সুবীরকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু আদালতে হাজির হন না সুবীর। অবশেষে আদালত সুবীরকে হাইকোর্টে হাজির করানোর নির্দেশ দেয় পুলিশকে। সেইমতো পুলিশ সুবীরকে আদালতে হাজির করায়।
মামলার শুনানি চলাকলীন কুমকুমের আইনজীবী আদালতে খোরপোষের দাবি করেন। সুবীরের উদ্দেশে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের প্রশ্ন, আপনি কত টাকা বেতন পান। সুবীর জানান, তিনি ৪৩ হাজার টাকা বেতন পান। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের নির্দেশ, বেতনের এক তৃতীয়াংশ খোরপোষ হিসেবে দিতে হবে কুমকুমকে। পাশাপাশি কুমকুমের উদ্দেশে বিচারপতির প্রশ্ন, আপনি কি সুবীরের সঙ্গে থাকতে চান? কুমকুমের উত্তর, থাকতে পারি। কিন্তু আমাকে যেন মারধর করা না হয়। সুবীর ও কুমকুম যাতে একসঙ্গে বসবাস করতে পারেন, তার জন্য দম্পতিকে কাউন্সেলিংয়ে পাঠায় আদালত।
আরও পড়ুন-বউ ফিরে পেলেন প্রেমিক স্বামী, ত্রাতা হাইকোর্ট! মেয়ের পরিবারকে ধমক বিচারপতির
স্বামী-স্ত্রীর এই মিলনের ব্যাপারে আদালতের উদ্যোগকে মানবিক জানিয়েছেন আইনজীবীদের অনেকেই। তবে এদিন বিচারপতি বসাকের বেঞ্চে প্রশ্নবাণের মুখেও পরতে হয় রোগা টিকটিকে বিএসএফ জওয়ানকে।বিচারপতি প্রশ্ন, এই চেহারায় কী করে বিএসএফের চাকরি পেলেন? আপনার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আদালতে ডেকে পাঠাব। কেন আপনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হবে না? আপনার অফিসারের কাছে কি এই পোশাক পরেই যান? তাহলে আদালতে কেন এই পোশাক পরে এসেছেন? জিন্সের প্যান্ট ও টিশার্ট পরে কলকাতা হাইকোর্টের ২৯ নম্বর এজলাসে হাজির ছিলেন বিএসএফের ওই জওয়ান। জিন্স ও টি-শার্ট পরায় বকা খেতে হয় সুবীরকে। হাইকোর্টের নির্দেশে পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ তাঁকে আদালতে হাজির করে।