কেন এই জরিমানা? এক কথায় বললে, কৌশিক চন্দের অভিযোগ বিচার ব্যবস্থাকে কলুষিত করা হয়েছে। বিচারপতির দিকে আঙুল তোলায় বিচারব্যবস্থা কলুষিত হয়েছে, এই যুক্তিতেই এই জরিমানা ধার্য করা হয়েছে, যা পরবর্তীকালে কোভিড চিকিৎসায় কাজে লাগানো হবে।আজ তাঁর প্রতি অনাস্থার অভিযোগ যদিও উড়িয়ে দিয়েছেন বিচারপতি চন্দ। তিনি জানাচ্ছেন বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থার কথা মাথায় রেখেই এই মামলা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। অর্থাৎ এবার এই মামলা অন্য বিচারপতির বেঞ্চে হবে। তাঁর কথায়, প্রধান বিচারপতি যেহেতু মাস্টার অব রোস্টার, তিনিই এই মামলার ভার তাঁকে দেন। কৌশিক চন্দ স্পষ্ট বলেন, ১৮ জুন মামলা শুনানির জন্য যখন আসে তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী গোপাল মুখোপাধ্যায় অনাস্থার কথা আনেননি। এর পরে রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ওব্রায়েন ২০১৬ সালের ওই ছবিটি ট্যুইট করেন। তারপর ছবিটি ট্যুইট করেন মহুয়া মৈত্র। অর্থাৎ কৌশিক চন্দ বোঝাতে চাইছেন তৃণমূল কংগ্রেস তৈরিই ছিল তাঁর বিরুদ্ধে যাওয়ার জন্য।
advertisement
নন্দীগ্রাম মামলায় ভার কৌশিক চন্দের উপর যাওয়ার পরই একযোগে বিরোধিতা শুরু করেছিল তৃণমূল। তৃণমূলের বরিষ্ঠ নেতারা সেই সময়ো কৌশিক চন্দের ছবি ট্যুইটারে শেয়ার করে বলতে শুরু করেন, তিনি বিজেপি ঘনিষ্ঠ। তৃণমূলের অভিযোগ ছিল বিচারপতি কৌশিক চন্দ যদি এই মামলায় রায় দেন তাহলে মামলাও একদেশদর্শী হতে পারে। বিচারপতি চন্দের এজলাসে এই মামলার শুনানি হলে তা কতটা নিরপেক্ষ হবে, সেই সংশয় প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি৷ কৌশিক চন্দ এই মতের বিরোধিতা করেছিলেন তবে মামলার স্বার্থে বিবেচনার কথাও জানিয়েছিলেন। তার পরেই এদিনের রায়দান।
গত ২৪ জুন আবেদনের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আর্জি জানান, বিচারপতি চন্দের নিজেরই এই মামলা থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত৷ যদিও বিচারপতি চন্দ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির কাছে জানতে চান, মামনার নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ থাকলে কেন তা আরও আগে জানানো হয়নি৷ তিনি আরও প্রশ্ন করেন, 'শুনানি সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই কেন আপনাদের মনে হচ্ছে যে সুবিচার পাবেন না? এটা কোন ধরনের শিষ্টাচার?
এদিন বিচারপতি কৌশিক চন্দ বলেন বহু সুবিধাবাদী মানুষ তাঁর দিকে আঙুল তুলতে শুরু করেছে। তাই তিনি যদি এই মামলা না ছাড়েন তবে বিতর্ক জিইয়ে রাখা হবে। এই কারণেই তিনি মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই মামলার বিচার করা তাঁর সাংবিধানিক কর্তব্যের মধ্যে পড়ে বলেও আক্ষেপের সঙ্গে আজ বলেন কৌশিক চন্দ।