যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে অন্যান্য বঙ্গ ও কেন্দ্রীয় পদ্ম নেতারা সাম্প্রতিক বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচিতে থেকে জোর গলায় বলেছেন, ‘‘২৪-এর লোকসভা ভোটের আগেই লাগু হবে নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ।’’ অমিত শাহ কিংবা অন্যান্য নেতাদের এই আশ্বাস কি শুধুমাত্র মতুয়া ভোটের দিকে তাকিয়েই? প্রশ্ন নানা মহলে। নাগরিকত্ব সংশোধন নিয়ে শুরু থেকেই চাপানউতোর। উনিশের লোকসভা ভোটের পর আইন তৈরি হয়। কিন্তু, সেই আইন, সিএএ, আজও কার্যকর হয়নি। সামনেই আবার লোকসভা ভোট। আবারও বঙ্গ বিজেপি-সহ অমিত শাহের মুখেও সিএএ-প্রতিশ্রুতি। যা নিয়ে তরজা তুঙ্গে।
advertisement
আরও পড়ুন- শাহী ‘৩৫’ টার্গেট উধাও ! সংখ্যা নয়, অমিত শাহ লক্ষ্য বোঝালেন অন্যভাবে
ভোটে গরম সিএএ-অস্ত্র। বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তুদের বড় অংশ তপসিলি জাতিভুক্ত মতুয়া। তাঁদের দাবি স্থায়ী নাগরিকত্ব। গত কয়েক বছরে এই নাগরিকত্ব ইস্যুতেই হয়েছে বিস্তর চাপানউতোর। সূত্রপাত ২০১৯-এ। উনিশের লোকসভা ভোটের আগে মতুয়াদের মন পেতে তাঁদের স্থায়ী নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় বিজেপি বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের। ভোটের ময়দানে ইস্যু হয় সিএএ। লোকসভা ভোটের ফলে এর ডিভিডেন্ডও পায় বিজেপি। মতুয়া প্রভাবিত রাণাঘাট এবং বনগাঁ আসনেও পদ্ম ফোটে। লোকসভা ভোটের পর সিএএ নিয়ে তৎপরতা বাড়ে পদ্ম শিবিরে। ২০১৯-এর ডিসেম্বরে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে ছাড়পত্র দেয় মোদির মন্ত্রিসভা। বিলে বলা হয়, পড়শি দেশগুলির অ-মুসলিম শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন– শীতের পথে বাধা ঘূর্ণিঝড় ! আগামী পাঁচ-সাত দিনে শীতের আমেজ বাড়ার সম্ভাবনা নেই
বিল সংসদে পেশ হতেই দেশজুড়ে বিক্ষোভের আগুন। যদিও, তারপরও পিছু হঠেনি মোদি সরকার। ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি আইনে পরিণত হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। কিন্তু, আজও কার্যকর হয়নি সেই সিএএ। যদিও, একুশের বিধানসভা ভোটের ময়দানে একাধিকবার পদ্ম নেতাদের মুখে শোনা গিয়েছে সিএএ-প্রতিশ্রুতি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগেও বঙ্গ সফরে এসে এক সভায় বলেছিলেন, সবাই করোনার টিকা পেলেই সিএএ কার্যকর করার পথে হাঁটবে কেন্দ্র। আবারও সিএএ নিয়ে ধর্মতলার দলীয় সমাবেশ থেকে শাহী ঘোষণা, ‘‘সিএএ লাগু হবেই।’’
প্রসঙ্গত,বাংলার প্রায় ৮৩টি বিধানসভা আসন মতুয়া প্রভাবিত। এর মধ্যে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ৫৩টি আসনে জেতে তৃণমূল। ৩০টিতে বিজেপি। রাজ্যে বিজেপির প্রাপ্ত আসনের প্রায় ৩৯% মতুয়া প্রভাবিত আসন জিতেছে বিজেপি। কিন্তু, সিএএ আজও চালু হয়নি। এর জেরে মতুয়াদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি, ‘বেসুরো’ হন বঙ্গ বিজেপি বিধায়ক মতুয়াদের অন্যতম মুখ হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার। সম্প্রতি বলেন, ‘‘আমার কেন্দ্রের ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম সিএএ- এর। অবিলম্বে সিএএ লাগু না হলে মানুষের কাছে আর ভোট চাইতে যেতে পারব না।’’