#কলকাতা: প্রতিবাদের ধরণ দেখে রাস্তায় বাস নামাতে অনিচ্ছুক বাস কর্মীরা। গত দুদিন ধরে কোণা এক্সপ্রেসওয়ে ও ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপরে যেভাবে অশান্তি হচ্ছে তাতে বাস চালাতে রাজি নন কর্মীরা। অভিযোগ যে অমূলক নয় তা মেনে নিচ্ছেন বাস মালিকরাও।
CAA ও NRC বিলের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন কিছু মানুষ। গত দু’দিন ধরে তাদের আন্দোলনের জেরে জ্বলেছে বেশ কিছু বাস। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে ট্রেনে। ভাঙচুর চালানো হয়েছে বাসে। আর তা দেখেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বাস কর্মীরা।
advertisement
ধর্মতলা থেকে দীঘা প্রতিদিন বাস চালান কেশব রায়। তার কথায়, “দীর্ঘ ১১ বছর ধরে বাস চালাচ্ছি। রাস্তায় অনেক ঘটনা দেখেছি। কিন্তু বিশ্বাস করুন এরকম মৃত্যু ভয় কোনওদিন পাইনি।কোণা এক্সপ্রেসওয়ে কোলাঘাট অবধি যেতে এখন হাত কাঁপছে। বাসে আমার যাত্রী থাকে। তাদের প্রাণ বাঁচানো আমার কাজ। কিন্তু যে যে ভাবে শনিবার বাস লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হল তাতে আমি বাস চালাতে পারব না। মালিককে জানিয়ে দিয়েছি।” কেশব বাবুর কথায় সমর্থন জানাচ্ছেন সরকারি বাস চালকরাও। এখন বিভিন্ন দিক থেকে দীঘা যাওয়ার বাস আছে। বাস ছোটে খড়্গপুর, মেদিনীপুর, ঝাডগ্রামের দিকে। ধর্মতলা বাস স্ট্যান্ডে তারা শোনাচ্ছিলেন তাদের নিজের চোখে দেখা কয়েক ঘন্টার কাহিনী।
বাস নিয়ে সমস্যায় পডেছেন উত্তরবঙ্গ গামী একাধিক বাসের মালিকও। শিলিগুড়ি, বালুরঘাট, কোচবিহার এমনকি মুর্শিদাবাদ যাতায়াত করে বহু বেসরকারি বাস। তাদের চালকদের কথায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের হাল বেহাল থাকায় তারা বীরভূম ঘুরে বাস নিয়ে যান। কিন্তু মুরারই সহ বীরভূম, মুর্শিদাবাদের একাধিক জায়গায় যা শুরু হয়েছে তাতে অতদুর যাত্রী নিয়ে দামি ভলভো বাস চালানো উচিত কিনা তা নিয়ে সংশয়ে তারা। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা ইতিমধ্যেই তাদের কর্মীদের জানিয়ে দিয়েছে বিপদ আঁচ করলে বাস থামিয়ে দিতে। কিন্তু তাতে সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে কিনা তা বুঝতে পারেছেন না কর্মীরা। এই রুটের অন্যতম সংস্থা যারা ভলভো বাস চালান তাদের বক্তব্য, ট্রেনে সমস্যা থাকলে লোকে তাদের বাসে চলে যায়। কিন্তু বাসের টিকিট বুকিং বাতিল হতে শুরু করেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে কোটি টাকার ভলভো রাস্তায় নামাতে আগ্রহী নন তারা।
ইতিমধ্যেই বাস অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে পরিবহণ দফতরের সাথে। বাস ইউনিয়নের নেতা তপন ব্যানার্জি জানিয়েছেন, শুধু কর্মী বা বাস নয় দুর্ঘটনা ঘটনা যাত্রীরাও অসুবিধায় পড়বেন। আমরা যথাযথ নিরাপত্তার কথা বলেছি। আশা করি প্রশাষন সাহায্য করবে। আর যারা বাসের কর্মী তারাও তো মানুষ। তাই তাদের ভয় পাওয়াটা একেবারে স্বাভাবিক। আশঙ্কার দোলাচল নিয়ে রোজ বাসের চালকের আসনে বসছেন কেশব, মফিজুল, বাপিরা।