গত ১লা জুলাই থেকে রাস্তায় নেমেছে বিভিন্ন সংগঠনের বেসরকারি বাস। এরই মধ্যে ৯ জুলাই ঘোষণা করা হয়, ফের কিছু কিছু জায়গায় লকডাউন পালন হবে। কন্টেনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয়। এর ফলে ফের ভয় পেতে শুরু করেন বাস কর্মীরা। যার জেরে অনেকেই কাজ করতে আগ্রহী নন। বিশেষ করে বাগনান থেকে ধর্মতলা, বারাসত থেকে ধর্মতলা, হাবরা থেকে ধর্মতলা এই সব রুটের বাস চালকরা বাসের চাবি স্টার্টাটের কাছে জমা দিয়ে চলে গেছেন। মালিকরা ফোন করলেও কোনও ফোন ধরছেন না তারা। বাসের কন্ডাকটর সোমনাথ ভৌমিক।
advertisement
বাগনানের এই বাসিন্দা ১৮ বছর ধরে এর সাথে যুক্ত। তিনি জানাচ্ছেন, "পেটের টান অবশ্যই আছে। কিন্তু আগে তো নিজের জীবন। সেটা না বাঁচলে কি করে চলবে? আমার বাড়ি থেকে জানিয়ে দিয়েছে ফিরে আসতে। আমি চলে যাচ্ছি।" বারাসাতে বাড়ি সুনীল মান্নার। ২৬ বছর ধরে বাস চালান। তিনি বলছেন, "পেটের টানে এই কাজ করতে হয়। কিন্তু এখন আর নয়। আমার বাড়ি আমাকে ফিরে যেতে বলেছে। আমি চলে যাচ্ছি।" বাস কর্মীদের এই সিদ্ধান্তে অবাক নন বাস মালিকরা। বাস মালিক শৈবাল ভট্টাচার্য বলছেন, "এই অবস্থায় কি করে আটকে রাখব? প্রত্যেকের জীবনের মুল্য আছে। আমরা দু'একবার বোঝাতে পারি মাত্র।"
বাস কর্মীদের এই সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন বাস মালিকরা। কর্মীরা কাজে যোগ না দেওয়ায় কলকাতায় বাসের সংখ্যা এক ধাক্কায় ৪৫০০ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১২০০ থেকে ১৪০০ কাছাকাছি। জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দোপাধ্যায়ের দাবি, "চালক ও কন্ডাক্টররা এতটাই ভয় পেয়ে আছেন যে তাদের দিয়ে আর ডিউটি করানো যাচ্ছে না। চাবি ফেলে রেখে চলে গেছেন তারা। মাস্ক বা স্যানিটাইজার না হয় আমরা দিলাম। কিন্তু যাত্রীদের থেকে সংক্রমণ হবে না এমন দাবি করব কি করে? তাই ওরা ওদের সিদ্ধান্ত নিক।" বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চ্যাটার্জি জানিয়েছেন, "যবে থেকে কন্টেনমেন্ট জোন আবার নতুন করে ঘোষণা করা হল, তবে থেকেই ওনারা ভয় পাচ্ছেন। ভয়ের আর একটা কারণ হল, লকডাউন হলে যদি বাড়ি ফিরতে না পারা যায় সেটা।" ফলে করোনার ভয়ে বাস চালানো বন্ধ করে দিলেন চালক-কন্ডাক্টররা।