জানা যাচ্ছে, গোটা এলাকা জুড়ে রয়েছে অ্যাকুইফার বা জলস্তর। টানেলের দুটি দিকের অংশ জুড়তে হবে। জুড়তে হবে প্রায় ৯ মিটার অংশ। এটি জোড়া হবে কংক্রিট বক্স জয়েন্ট করে৷ যা পুরনো মেট্রোয় আছে। আর এই বক্স জয়েন্ট করতে গিয়েই বিপত্তি। কারণ টানেলের নিচের অংশ বা ভূমি বা প্ল্যাটফর্ম ল্যান্ড কংক্রিট করতে হবে। সেই কংক্রিটের কাজ করতে গিয়েই প্রায় ৫ মিটার খোঁড়া হয়েছে৷ আর সেখান দিয়েই ক্রমাগত জল ঢুকতে শুরু করে দিয়েছে৷ এই জল ঢোকা বন্ধ করতে গিয়েই গ্রাউটিং করা হচ্ছে।
advertisement
গ্রাউটিং হল রাসায়নিক, সিমেন্ট আর জলের সংমিশ্রণ। সেটাই পাঠানো হচ্ছে। আর এই জল ঢোকার জন্যেই ফের নতুন করে কম্পন তৈরি হয়েছে। তার জেরেই গতকাল একাধিক বাড়িতে ফাটল ধরেছে বলে মনে করছে ইঞ্জিনিয়াররা।ফের বউবাজার মেট্রোর কাজ করতে গিয়ে বিপত্তি৷ আবারও বউবাজারের বেশ কিছু বাড়িতে বড়সড় ফাটল ধরা পড়ল৷
আরও পড়ুন : বৌবাজারে আচমকা পাঁচ পাঁচটি বাড়িতে ফাটল! মেট্রোরেলের কাজের জের? নাকি অন্য 'ভিলেন'?
বউবাজার দিয়ে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো রেলের সুড়ঙ্গ তৈরির সময় ২০১৯ সালে প্রথম বার বেশ কিছু বাড়িতে ফাটল ধরা পড়ে৷ এর পর ফের ২০২০ সালে ফাটল ধরা পড়ে৷ দু' বারই বহু পরিবারকে বসত বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র সরে যেতে হয়৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যাঁরা দু' তিন বছর আগে বাড়ি ছেড়ে গিয়েছিলেন, তাঁরা এখনও ফিরতে পারেননি৷ তাই এবার আর নিজেদের বাড়ি ছেড়ে বেরোতে নারাজ স্থানীয় বাসিন্দারা৷
ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন এলাকার কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে৷ এলাকায় গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েন স্থানীয় বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ বউবাজারের দুর্গা পিতুরি লেনের একাধিক বাড়িতে বুধবার সন্ধ্যা থেকেই ফাটল ধরা পড়েছে৷ মেট্রো সূত্রে খবর, ওই অংশে সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ শেষ৷ বর্তমানে সুড়ঙ্গে কংক্রিট ঢালাইয়ের কাজ চলছে৷ পাশাপাশি উর্বি ও চান্ডি নামে দু'টি টানেল বোরিং মেশিনকে কেটে কেটে মাটির নীচ থেকে তোলার কাজ হয়ে গেছে৷ আপাতত সুড়ঙ্গ সম্পূর্ণ করার জন্য গ্রাউন্ড কংক্রিট করার কাজ চলছে।
আরও পড়ুন : কেন্দ্রের বঞ্চনায় সোচ্চার মমতা, মোদিকে লিখলেন চিঠি! তুললেন একগুচ্ছ অভিযোগ...
বাসিন্দাদের প্রশ্ন, 'প্রাণ ভয়ে আমরা রাস্তায় নেমে এসেছি৷ কিন্তু কার ভরসায় কোথায় যাব? আগে যাঁরা বাড়ি ছেড়ে গিয়েছেন, তাঁরা এখনও ফিরতে পারেননি৷ 'ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর দায়িত্বে থাকা কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশনের ডাইরেক্টর প্রজেক্ট এন সি কারমালি জানিয়েছেন, 'বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে৷ হোটেলে নিয়ে রাখা হবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে৷ ১৪টি মতো পরিবার রয়েছে৷ আমাদের পক্ষ থেকে যা করণীয়, করা হচ্ছে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে৷' তাঁর আরও দাবি, 'ফাটল সবে ধরতে শুরু করেছিল৷ খুব ভয়ের কিছু নেই৷ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবেই ওই পরিবারগুলিকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে৷'