কৈলাশ বিজয়বর্গীও-র জায়গায় দায়িত্ব নেওয়ার পর, রাজ্য বিজেপির প্রশিক্ষন শিবিরকে উপলক্ষ্য করে রাজ্যে প্রথম পা রাখলেন সুনীল বনশল। যোগী রাজ্যে দলের নির্বাচনী সাফল্যের পেছনে তার অবদানকে গুরুত্ব দিয়েই তাকে বাংলায় পাঠান অমিত শাহ। আর, সেই দায়িত্ব রূপায়ণে কেন্দ্রের মনোভাব মঙ্গলবার রাজ্য নেতৃত্বের কাছে আরও একবার স্পষ্ট করে দিলেন বনশল।
সুকান্ত, শুভেন্দু, দিলীপদের সামনে ভাষণ দিতে গিয়ে বনশল বললেন, " দলের বিস্তার করতে হবে। তার জন্য দরজা খোলা রাখতে হবে। দরজা, জানালা বন্ধ করে কোন রাজনৈতিক দল চলে না। রাজনৈতিক দলে আসা যাওয়ার দরজা বন্ধ করা যায় না। "
advertisement
আরও পড়ুন - Weather Update: অসহ্য, অস্বস্তিকর আবহাওয়ায় নাজেহাল, বৃষ্টি কোথায় ও কখন, রইল লেটেস্ট ওয়েদার আপডেট
বনশলের এই বার্তা বিজেপির এক রাজ্য নেতার মতে, আসলে সুকান্ত, দিলীপদের উদ্দেশ্যে শাহের বার্তা। রাজ্য বিজেপির অভ্যন্তরীন সমীকরনে সুকান্ত - দিলীপে যে দ্বন্দই থাক না কেন, অন্যদল বিশেষত তৃণমূল থেকে নেতা এনে বিজেপিকে শক্তিশালী করার ব্যাপারে একটা সাধারন অনীহা আছে দু-জনেরই। কৈলাশ, মুকুল জমানায় এই নিয়ে তদানীন্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে কেন্দ্রের সংঘাত প্রকাশ্যে এসে গিয়েছিল। কিন্তু, ২০২১ কে 'নাউ অর নেভার ' ধরে নির্বাচন লড়তে নামা মোদী-শাহের প্রবল চাপের কাছে মাথা নোয়াতে হয়েছিল দিলীপের বিজেপিকে।
কিন্তু, ২১ শে রাজ্যে ক্ষমতা দখল অধরা হতেই কেন্দ্রীয় লাইনের বিরুদ্ধে তোপ দাগা শুরু করে দিলীপ শিবির। যার জেরে শেষ পর্যন্ত আচমকাই তাকে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে বার্তা দেয় দিল্লি।
দিলীপের থেকে ব্যাটন নিয়ে এই ইস্যুতে খানিকটা দিলীপকেই অনুসরণ করতে শুরু করেন সুকান্তও। দল পরিচালনায় সুকান্ত, অমিতাভদের এই রক্ষণশীল মনোভাবের জেরে দলের রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে তৃণমূল থেকে আসা শীর্ষ নেতাদের মধ্যে নতুন করে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছিল। ২৪- এর লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে তাই বনশলকে দিয়ে রাজ্য বিজেপিকে কেন্দ্রের আবস্থান আবারও স্পষ্ট করে দিলেন শাহ -নাড্ডা।
উত্তরপ্রদেশে যোগী রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে বনশল বুঝেছিলেন, রাজ্য দলের মধ্যে গোষ্ঠী আর উপদলীয় কার্যকলাপ বন্ধ করে দলকে এককাট্টা করতে না পারলে রাজ্যে ক্ষমতায় আসা যাবে না। কাকতালীয় হলেও, এ রাজ্যের ক্ষেত্রেও দলের সমস্যা অনেকটা তেমনি। তাই, শুরুতেই বার্তা।'‘ নতুনদের দলে কাজ দিতে হবে। কাজ দিয়েই তাদের যোগ্যতার পরীক্ষা নিতে হবে। উল্টোটা নয়। "
রাজ্য বিজেপিতে আদি ও নব্য বিজেপির দ্বন্দ নিয়ে বনশল সুকান্তদের মনে করিয়ে দিয়েছেন, '‘অন্য দল থেকে যারা বিজেপিতে আসবে, তাদের সম্মান করতে হবে। দায়িত্ব দিতে হবে। বহিরাগত বলে তাদের সরিয়ে রাখা যাবে না। '’, এ বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে আরও উদার হবার পরামর্শও দিয়েছেন বনশাল।
যদিও, রাজ্য বিজেপির এই নতুন জমানায় গোষ্ঠী রাজনীতির শিকার প্রাক্তন এক রাজ্য নেতার মতে, এসবই হল রাজনীতির বাইবেল, কোরান, কিম্বা গীতার বাণী, তত্ত্ব কথা। বাস্তবে এর কোন প্রতিফলন নেই।অন্তত এই বিজেপিতে।
বৈদিক ভিলেজের নিভৃত প্রশিক্ষন শিবিরে বসে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যে মার্গ দর্শন দিয়ে গেলেন, তা ক্লাস রুমের বাইরে প্রয়োগ করার সদিচ্ছা বা সাহস বিজেপিতে আছে না কি? থাকলে, সিবিআই, ইডির তাড়া খাওয়া নেতাদের দল আশ্রয় দিয়ে রাজ্যে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখতে পারে না এমনটাও মত একপক্ষের৷
ARUP DUTTA