আজ বিধানসভায় বিষ্ণু বলেন, 'পাহাড়ে পৃথক রাজ্যের দাবি থেকে আমি সরছি না। আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পদাঙ্ক অনুসরণ করেছি। মোদিজি বলেছেন, ভোকাল ফর লোকাল৷ আমি সেই কাজই করেছি। বঙ্গভঙ্গের দাবি কোন অসাংবিধানিক নয়। রাজ্য ভেঙে নতুন রাজ্য বা দু'টি রাজ্যের সংযুক্তি, দু'টিই সাংবিধানিক। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে আমি যেকথা বলছি, তা দিয়ে শুধু রাজ্যকে নয়, কেন্দ্রকেও বার্তা দিয়েছি। '
advertisement
প্রসঙ্গত রাজ্য সফরে এসে দলের বিধায়ক, সাংসদদের বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন, রাজ্য ভাগের দাবি তোলা চলবে না৷
এখানেই শেষ নয়, নাম না করে রাজ্য ভাগ নিয়ে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাকেও কার্যত একহাত নিয়েছেন বিষ্ণু। বিষ্ণু মনে করিয়ে দিয়েছেন, নাড্ডা যে হিমাচল প্রদেশের সাংসদ, সেই হিমাচল এক সময় পঞ্জাব ও কাংড়া উপত্যাকার কিছু অংশ নিয়ে তৈরি হয়েছিল। ফলে, তাঁর মতে, রাজ্য ভাগের দাবি কোন অযৌক্তিক বা অসাংবিধানিক হতে পারে না।
আরও পড়ুন: কান নয়, মাথাকে ধরতে হবে! কাকে নিশানা করলেন দিলীপ ঘোষ? তুমুল শোরগোল
যদিও, এদিনও তার এই মন্তব্যকে '' বিচ্যুতি " বলেই মন্তব্য করেছেন রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। বিষ্ণু বা কোনও নেতা যদি দলের অবস্থানের বাইরে কোনও কথা বলেন,তাহলে তার দায় দল নেবে না বলেও দায় ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছে বিজেপি৷
বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কের এই মন্তব্য রাজনৈতিক কারণেই কার্যত লুফে নিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল মুখপাত্র কূণাল ঘোষের কটাক্ষ - 'আসলে বিজেপি নেতৃত্বের দলের উপরে কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। সামনে বিরোধিতা করলেও, আসলে রাজ্যভাগকে প্রচ্ছন্ন মদত দেয়।'
আরও পড়ুন: কোনও মানসিক অবসাদ, কেন পার্কসার্কাসে আত্মঘাতী কনস্টেবল? কালিম্পংয়ে ভেঙে পড়েছে পরিবার
রাজ্য ভাগ নিয়ে এই চাপান উতোরে রাজ্য রাজনীতি আবার সরগরম। দলের রূদ্ধদার বৈঠকে নাড্ডা বা অমিত শাহের মতো শীর্ষ নেতৃত্ব সাংসদ, বিধায়কদের যাই নির্দেশ দিন না কেন, ভোট বড় বালাই। পর্যবেক্ষকদের মতে, বিষ্ণু শর্মা বা জয়ন্ত রায়রা যা বলছেন, আসলে তা ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে। ২৪- এর লোকসভা ভোটে আসন ধরে রাখতে হলে, উত্তরবঙ্গে বঞ্চনা, অনুন্নয়নের দিশা দেখাতে হবে সাংসদ, বিধায়ককে। কিন্তু, বাস্তবে তা সম্ভব নয়।
ফলে, বাকি রইল মানুষকে স্বপ্ন দেখানো। সেই স্বপ্ন হল পৃথক রাজ্য। সে উত্তরবঙ্গ বা জঙ্গলমহল, যাইহোক না কেন, বার্তা একটাই। রাজ্যে সরকারে না থাকার জন্যই বিজেপি তার দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা সম্ভব পৃথক রাজ্য গঠন করা গেলে। আসন্ন পঞ্চায়েত বা ২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহলের বঞ্চিত মানুষের কাছে আবার স্বপ্নের ফেরিওয়ালা হয়ে উঠতে পারলে তবেই ২৪- এর ভোটে কুর্সি ফিরে পাওয়ার সম্ভবনা। সে কারণেই, সব জেনেশুনেও রাজ্য ভাগকে সমর্থন করে না দল, এই বিবৃতি দিয়ে দু' কূল রক্ষার কৌশল নিয়েছে বিজেপি।