একই সঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কী রণকৌশল নেওয়া হবে, তা নিয়েও আলোচনা হয় এই বৈঠকে। রাজ্য কমিটির বৈঠকের প্রথম দিনে জেলা নেতৃত্ব জানিয়েছে নিচু তলায় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করছে গেরুয়া শিবির। সেখানেই জেলার নেতারা জানান, "নো ভোট টু টিএমসি" রাজ্য জুড়ে এই স্লোগানকে সামনে রেখে পঞ্চায়েত ভোটে নামতে চায় বিজেপি। সেই রণকৌশলকে সফল করতে গ্রাম বাংলার তৃণমূল স্তরে আরএসএস-এর কর্মীরা ময়দানে নেমে পড়েছেন।
advertisement
আঞ্চলিক নেতাদের কাছে তাঁরা টোপ দিচ্ছে, তৃণমূলকে হারাতে হলে বিরোধী সব ভোট যাতে এক বাক্সে পড়তে হবে। সে জন্যই একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দিতে হবে। এর জন্য কোথাও তৃণমূলের বিরুদ্ধে বামেরা প্রার্থী দেবে কোথাও বিজেপি প্রার্থী দেবে। যেখানে বামেরা প্রার্থী দেবে সেখানে বিজেপি প্রার্থী দেবে না। আর বিজেপি যেখানে প্রার্থী দেবে সেখানে বামেদের প্রার্থী দেওয়া চলবে না। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট দিতে হলে মানুষের একটাই বিকল্প থাকবে। এমনই চুক্তি করতে চাইছে গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন: চিঠিতেই চরম বিপদ, হাইকোর্ট বলতেই বিরাট পদক্ষেপ CBI-এর! জেলে দিনের বেলায় যা হবে...
আর এভাবেই মহাজোটের 'অফার' ফেরি করছে তাঁরা। অনেক সময় আবার 'সাগরদিঘি মডেলের' উদাহরণ সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে। তবে এই পুরো বিষয়টিতে কড়া নজর রাখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন জেলার নেতারা। সিপিএম রাজ্য কমিটির এক নেতা জানিয়েছেন, সাগরদিঘি নিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ভুল ব্যাখ্যা করছে বিজেপি-আরএসএস। সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছিল। আর সেই প্রার্থীকে বামেরা সমর্থন করেছিল। মানুষ ভোট দিয়েছিল। কংগ্রেস জয়লাভ করেছিল। এখানে বিজেপি কোথা থেকে এল! জোট প্রার্থী যেমন বিজেপির ভোটে থাবা বসিয়েছে, তেমনই তৃণমূলেরও একটা বড় অংশের ভোট পেয়েছে। আসলে ভোট কারও পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের দুর্নীতি মানুষ দেখতে পাচ্ছে। মন্ত্রীর বান্ধবীর ফ্ল্যাটে টাকার পাহাড় দেখেছেন। কয়লা, বালি, পাথর থেকে শিক্ষা কোথায় নেই দুর্নীতি? গোটা শিক্ষা দফতরটাই জেলে চলে গিয়েছে। তার উপর রয়েছে শাসকদলের অত্যাচার। মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। আর বিজেপিকেও মানুষ দেখছে। গ্যাসের দাম কতটা বেড়েছে? মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। তাই রাজ্যের মানুষ তৃণমূলের বিকল্প হিসেবে বিজেপিকেও চায় না। শুধু সাগরদিঘি কেনও সারা রাজ্যের মানুষই একই কথা ভাবছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেটা বোঝা যাবে। আর নির্বাচন মানে শুধুমাত্র জেতা বা হারা নয়। এটা একটা নীতির লড়াই। একদিকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে অন্যদিকে লাল ঝাণ্ডার তলায় মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজপথে গ্রাম বাংলায় লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বামেরাই। সেখানে বিজেপি কার্যত কোন ভূমিকাই নেই। তাই ঘোলা জলে মাছ ধরতে লোক নামিয়েছে গেরুয়া শিবির কিন্তু তৃণমূলকে হারাতে বামেরা সম মনোভাবাপন্ন দলগুলির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: হুইল চেয়ারে অনুব্রত মণ্ডল, হলটা কী! ছোট্ট প্রশ্নের উত্তরে যা বললেন, তাজ্জব সবাই
কংগ্রেসের সঙ্গেও জোট হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে সাগরদিঘিতে মানুষ দেখিয়ে দিয়েছে যে তৃণমূলকে হারানো সম্ভব। তার জন্য কোনও নীতি বিসর্জন দিতে হয়নি। আর বিজেপি বা তৃণমূলের সঙ্গে কোনও জোট করা যাবে না, সেটা দলের পক্ষ থেকে আগেই বলে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের বক্তব্য নো ভোট টু টিএমসি এবং নো ভোট টু বিজেপি-দুটোই।"