পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যার প্রায় তিরিশ শতাংশ মুসলিম। পঁচিশ শতাংশের বেশি মুসলিম ভোটার রয়েছেন এমন বিধানসভা আসনের সংখ্যা ১৪৬টি। একুশের ভোটে এই ১৪৬টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জেতে ১৩১টিতে। অর্থাৎ, সংখ্যালঘু ভোট যার, বাংলা তার। এ এক মোটা দাগের হিসাব বলা যায়।
আরও পড়ুন - ঠিক যেন মেলবোর্ন-সানফ্রান্সিসকো, কলকাতার রাস্তায় কি এবার চলবে ট্রলিবাস
advertisement
বঙ্গের নির্বাচনে ভাল ফল করতে চেয়ে সংখ্যালঘু ভোট যে একটা বড় ফ্যাক্টর, এত কোনও নতুন কথা নয়! তাহলে হঠাৎ নতুন করে এই তৎপরতা কেন? আর সংখ্যালঘু মন জয়ে আগামিদিনে কোন স্ট্র্যাটেজি নেবে বিজেপি। পদ্মশিবিরের অন্দরে এখন কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে এই সমস্ত প্রশ্ন।
আপাতত, বিজেপির অন্দর সূত্রের খবর, চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে, পঞ্চায়েত ভোটের কয়েক মাস আগে থেকেই সংখ্যালঘুদের মন পেতে জোর তৎপরতা শুরু করেছে নেতৃত্ব।
একুশের নির্বাচনে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বিধানসভা আসনের মধ্যে মাত্র ১৪টি গিয়েছিল বিজেপির ঝুলিতে। অর্থাৎ, সংখ্যালঘু ভোটের প্রায় পুরোটাই গিয়েছিল তৃণমূলে ঘরে। সেখানেই এবার ভাগ বসাতে চায় বিজেপি। যদিও এ ব্যাপারে শাসক-শিবিরের নেতা ফিরহাদ হাকিমের কটাক্ষ, "ওরা সংখ্যালঘু সংখ্যাগুরুর কথা বলে, আমরা মানুষের কথা বলি।"
আরও পড়ুন - বেশ্যাবৃত্তি করে টাকা উপার্জন করেছি! আদালতে দাঁড়িয়ে বোমা বলিউডের সুন্দরী নায়িকার, তোলপাড়
সংখ্যালঘুদের মন জয়ে গেরুয়া শিবিরের প্রতি ভীতি কাটাতে বিজেপি অস্ত্র করতে চাইছে মোদি সরকারের প্রকল্পগুলিকে। সেই সঙ্গে CAA নিয়ে সংখ্যালঘুদের মনে যাতে কোনও শঙ্কা না থাকে, সেটাও নিশ্চিত করতে চাইছেন বিজেপি নেতারা। কদিন আগেই বাসন্তীর সভায় এ নিয়ে মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে দলের ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য তারকা নেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে।
তিনি বলেছেন, "বিজেপি সংখ্যালঘুদের বিরোধী নয়, তৃণমূল সাধারণ মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড থাকলে কেউ দেশ থেকে বার করতে পারবে না। নাকে সর্ষের তেল দিয়ে ঘুমোন।"
ওই একই সভায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মুখেও প্রায় একই কথা শোনা গিয়েছিল। বঙ্গে CAA কার্যকর হলে, কোনও সংখ্যালঘু নাগরিকের যে ক্ষতি হবে না, বিজেপির রাজ্য সভাপতি হিসাবে সভায় দাঁড়িয়ে রীতিমতো কথা দিয়েছেন তিনি।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "আমরা কাউকে আলাদা চোখে দেখি না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপি সবার উন্নয়ন হোক, এটাই চান। উন্নয়ন নয়, বাংলার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভোট বাক্স হিসেবে ব্যবহার করেছে তৃণমূল।" তাঁদের প্রতি যে বঞ্চনা হয়েছে তা বুঝতে পেরেই বাংলার সংখ্যালঘু সমাজ শাসকদলের থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করেছে বলে দাবি গেরুয়া শিবিরের। আর এই সুযোগকে কাজে লাগাতে এখন উঠে পড়ে লেগেছে বঙ্গ পদ্ম শিবির।