নিজের স্কুলের খুদে পড়ুয়ার মৃত্যুতে দৃশ্যতই ভেঙে পড়েন প্রধানশিক্ষক। তিনি বলেন, “পুলিশ যদি সচেতন থাকত, তা হলে আমি আমার ছেলেটাকে হারাতাম না।” তাঁর অভিযোগ, স্কুল শুরুর সময়ে প্রতি দিন যানজট দেখা গেলেও তা সামলাতে ট্র্যাফিক পুলিশের দেখা মেলে না।
আরও পড়ুন- তোলপাড় করা খবর! রাতারাতি দিদি নম্বর ওয়ানের সঞ্চালিকার মুখবদল! আর নয় রচনা, কে নিলেন তাঁর জায়গা?
advertisement
এ দৃশ্য চোখে দেখা যায় না। অথচ শুক্রবারের সকালে গোটা শহর সাক্ষী ছিল হৃদয় মোচড়ানো সেই দৃশ্যের। মৃত সন্তানের জন্য মায়ের আকুল কান্না, বুকফাটা হাহাকার। সাত বছরের শিশুর স্কুলব্যাগ বুকে চেপে ধরে রয়েছেন মা। কোল শূন্য। মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে তার সাত বছরের সন্তানকে।
এই মাসের শেষেই ছিল ছোট্ট সৌরনীলের জন্মদিন। ২৫ তারিখের প্রস্তুতি নিচ্ছিল তার পরিবার। ঘুরতে যাওয়ার কথাও ছিল। সে জন্মদিন আর পালন হবে না হয়তো কোনওদিন। অভিভাবকের সঙ্গে সাইকেল নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিল ওই স্কুল পড়ুয়া। আর এক লহমায় সব শেষ।
টু, সেকশন ‘এ’, রোল নম্বর ২১। সৌরনীল সরকার, এই নামে উপস্থিতির খাতা খুলে বড়িশা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকারা ডাকলে ‘প্রেজেন্ট মিস’ আর শোনা যাবে না! বন্ধুদের সঙ্গে খুনসুটি করে ক্লাসের ম্যাডামের কাছে আর অভিযোগও জানাবে না ছোট্ট সৌরনীল! আগামী ২৫ অগাস্ট জন্মদিন কী কী করবে, তাই নিয়ে ভাবনার অন্ত ছিল না প্রথম বেঞ্চে বসা ছোট্ট ছেলেটার। আর এই সব কথা ভেবেই কান্নায় বার বার চোখ ভিজে আসছে সৌরনীলের স্কুলের ক্লাস টিচার মমতা ঘোষের।
বেহালায় লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয় স্কুল পড়ুয়া সৌরনীল সরকারের। আহত হয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি ওই পড়ুয়ার বাবা। এরপরই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বেহালা। পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরানো হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। অভিভাবকের সঙ্গে সাইকেল নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিল ওই স্কুল পড়ুয়া। সেসময় মাটি বোঝাই একটি লরি ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলে শিশুটির মৃত্যু হয়। শিশুটির বাবাকে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে। এলাকায় ক্ষিপ্ত জনতা পুলিশের গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে ভাঙচুর করে। অভিযোগ, একজন মাত্র পুলিশ যতক্ষণে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে, ততক্ষণে ঘাতক গাড়িটি পালিয়ে যায়। রাস্তা অবরোধ করে জনতা। ডায়মন্ড হারবার রোড সহ বেহালা চৌরাস্তাও অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।