সেই সময়ে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হয় তার। মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়ে সায়কের। সেই চিকিৎসা চলতে চলতে সমস্যা দেখা যায় কিডনি। প্রতিস্থাপনের নির্দেশ দেন চিকিৎসকরা। অনবরত সন্তানের অসুস্থতা ও কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য বেশ আর্থিক সঙ্কটেই পড়েছিলেন সায়কের বাবা মা। তখন তাঁরা বর্ধমানে তাঁদের পাঁচ বিঘা জমি বিক্রি করে কলকাতায় চলে আসেন ছেলের চিকিৎসার জন্য।
advertisement
কলকাতায় সিকিউরিটি গার্ডের একটি চাকরি পান সায়কের বাবা। একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করে বাবা-মা ও ছেলে। ছেলের কিডনি প্রতিস্থাপন হয়ে গেলেও চিন্তামুক্ত হননি সায়কের বাবা ও মা। কারণ ২০১৬ সালেই চিকিৎসকরা জানান, আবার সায়কের কিডনি বিকল হয়ে পড়তে পারে। অথবা আরও বড় কোনও শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। একজন চিকিৎসক সায়কের বাবা মাকে পরামর্শ দেন, চেন্নাইয়ের রেলা হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ নরেশ শনমুগমের কাছে ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার।
ডক্টর নরেশ এবং প্রফেসর মহম্মদ রেলা পরীক্ষার মাধ্যমে দেখেন, সায়ক সিরোসিস-এ ভুগছে। তার সঙ্গে রয়েছে হাইপারটেনশন- পেটের শিরায় উচ্চ রক্তচাপ। দুজন চিকিৎসকই লিভার প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন সায়কের বাবা ও মাকে। তাঁরা চিকিৎসকদের পরামর্শে রাজিও হন। লিভার দান করবেন কে, তার খোঁজ নিতে শুরু করেন তাঁরা। অবশেষে ৬ মাস পর লিভারের খোঁজ পায় হাসপাতাল।
ডক্টর রেলা বলছেন, "আমাদের ৬ মাস অপেক্ষা করতে হয় অঙ্গের খোঁজ পেতে। অস্ত্রোপচারের পরেই সায়কের অবস্থা বেশ সংকটজনক ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সে সুস্থ হতে থাকে।" ডক্টর নরেশ জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের ১১ দিন পরেই ছেড়ে হাসপাতাল থেকে দেওয়া হয় সায়ককে। এখন সেই কিশোর ভালো আছে।
সায়কের বাবা ও মা সংবাদমাধ্যমকে বলছেন, "অসুস্থতার জন্য স্কুলে যেতে পারছে না আমাদের ছেল। রেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা আমাদের আশা দিয়েছেন যে আমাদের ছেলে এখন ভালো আছে এবং খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে স্কুলে গিয়ে ক্লাস করতে পারবে অন্য বাচ্চাদের মতো।"
