সম্প্রতি বৈদিক ভিলেজে গেরুয়া শিবিরের তিন দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরে ঐক্যের অনেক ছবি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সামনে এসেছে। কোথাও এক ফ্রেমে সুকান্ত- শুভেন্দু-অমিতাভ-দিলীপ। আবার কখনও বা সুনীল বনসল এবং বি এল সন্তোষের মতো কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে এক ফ্রেমে বঙ্গ বিজেপির অন্য নেতারা।
আরও পড়ুন: অভিষেক যখন ইডি-র কাছে, দারুণ কৌশল নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণে তৃণমূল
advertisement
আর এর পরই বিরোধীদের কথায়, 'অনেকে বলছেন, বঙ্গ বিজেপির ঐক্য ছবিতেই। মুখ খুললেই তো সেই অনৈক্যের সুর'। রাজ্যে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অস্ত্রে শান দিতে শুরু করেছে বঙ্গ বিজেপি। অন্য দল থেকে শুধুমাত্র কর্মীদের বিজেপিতে নেওয়া হবে। নেতাদের জন্য দরজা বন্ধ। এমনও মন্তব্য করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বিজেপির রাজ্য সভাপতি যা বললেন, তার থেকে ভিন্ন সুর প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা বিজেপি সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের।
আরও পড়ুন: 'বিতর্কের সাগরে' ডুব দিতে চলেছেন নুসরত জাহান? যেতে পারেন বিগ বসের ঘরে!
গত বুধবার গণেশ পুজোর এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন,' যদি কেউ আসতে চায়, দলের মনে হয় যে একে নিলে লাভ হবে, তাহলে দল ভাববে। আমরা নেতাও নিয়েছি। কর্মীও নিয়েছি। চিরদিন নিতে হবে। শুধু কর্মী নিলে হবে না'। তবে শুধু এই ইস্যুতেই নয়, নানান ইস্যুতে বঙ্গ বিজেপির এই অনৈক্যের ছবি বারবারই অস্বস্তিতে ফেলেছে পদ্মের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। যার জেরে বেদিক ভিলেজের প্রশিক্ষণ শিবিরে এসে সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বি এল সন্তোষকে বার্তা দিতে হয়েছে যে, দলে কোন্দল কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। এতে কর্মীদের মনোবল ভেঙে যাবে। নিজেদের বিবাদ নিজেরাই মেটান। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এরকম কড়া বার্তা অবশ্য আগেও একাধিকবার দিয়েছেন। কিন্তু তাতে বঙ্গ বিজেপির পুরনো রোগ যে এখনও সারেনি তার প্রমান পদ্ম নেতাদের একাধিক ইস্যুতে মতানৈক্যেই স্পষ্ট হয়। তৃণমূল সহ অন্য বিরোধী শিবির কটাক্ষ করে বলে, বঙ্গ বিজেপির এখন তিন মাথা। সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারী।
পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যেও একাধিক গোষ্ঠী রয়েছে। তারও প্রভাব পড়ে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের উপর। যেমন বিজেপির জাতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা প্রায় প্রতিদিনই বঙ্গ বিজেপি নেতাদের তুলোধনা করছেন। গতকাল তো রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে নিশানা করে বেনজির আক্রমণ করেন অনুপম হাজরা। বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোট। চব্বিশে লোকসভার লড়াই। তার আগে বঙ্গ বিজেপির নেতারা কোন্দল মেটাতে না পারলে তার ফল ভোটে পড়তে বাধ্য। এমনই মত পর্যবেক্ষকদের একাংশের। তবে শুধু পর্যবেক্ষকরাই নন, দলের অন্দরেও এমন আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকেই।