আদালতে সওয়াল করতে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের আইনজীবী দাবি করেন, ওই স্কুলেরই একদল শিক্ষকের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন প্রধান শিক্ষক। স্কুলের অডিট আটকানোর জন্য হামলা চালানো হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা ভিত্তিহীন বলেও আদালতে দাবি প্রধান শিক্ষকের আইনজীবীর।
তিনি আদালতে দাবি করেন, কিছু দিন আগে ওই স্কুলে এক নাবালিকার যৌন হেনস্থার ঘটনা ঘটে। ঘটনায় অভিযোগের তির স্কুলের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তিনি ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন অনেকদিন। সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ছিল তার ওপরই। সাধারণ মানুষ ওই শিক্ষকের উপরে ক্ষুব্ধ হয়েই স্কুলে হামলা চালান বলে আদালতে দাবি করেন অধরা প্রধান শিক্ষকের আইনজীবী।
advertisement
স্কুলে ঢোকার চাবি এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর থেকে নিয়ে হামলা চালায় জনতা। হামলার নেপথ্যে প্রধান শিক্ষকের কোনও মদত ছিল না। হামলার পেছনে মদত রয়েছে অনুমান করে এফআইআর-এ নাম ঢোকানো হয়েছে প্রধান শিক্ষকের। প্রধান শিক্ষককে আগাম জামিন দেওয়া হোক বলে আদালতে দাবি করেন তার আইনজীবী।
জামিনের বিরোধিতা করে সরকারি আইনজীবি আদালতে জানান, স্কুলের ভিতরে হামলা হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মারধর এবং তাণ্ডবের মাস্টারমাইন্ড প্রধান শিক্ষক। তিনি দুষ্কৃতিদের স্কুলে ঢুকিয়ে ভাঙচুর চালিয়েছেন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মারধর করান। দুষ্কৃতিরা শিক্ষিকাদের ছাড় দেয়নি। কলকাতা হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে প্রধান শিক্ষককে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। পরে ডিভিশন বেঞ্চ একই নির্দেশ দেয়। জামিনের চূড়ান্ত বিরোধিতা করছি আমরা। এখানেই শেষ নয়।
এদিন আক্রান্ত শিক্ষক শিক্ষিকাদের তরফেও আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেন। তিনি আদালতে বলেন, প্রধান শিক্ষক স্কুলের সবাইকে গায়ের জোরে চুপ করিয়ে রাখতেন। তার করা অন্যায়ের প্রতিবাদ করা যেত না। যারাই প্রতিবাদ করতেন তাদের বদলির ব্যবস্থা করতেন। এমন কী হুমকিও দিতেন। স্কুলে দীর্ঘদিন অডিট করা হয়নি। আদালত নির্দেশ দিয়েছিল অডিট করার। অডিটের জন্য স্কুলে গিয়েছেন, উনি অডিট আটকানোর চেষ্টা করেছেন নিজের প্রভাব খাটিয়ে। নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছে শিক্ষক শিক্ষিকাদের। এখনও মুখ বন্ধ রাখার জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে প্রত্যেকদিন। জামিনের বিরোধিতা করছি।
সব পক্ষের সওয়াল শুনে এবং হাইকোর্টের নির্দেশের মানত্য দিয়েই অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত বলে সূত্রের খবর।