#কলকাতা: সপ্তাহের প্রথম দিন থেকেই শুরু ভোগান্তি। বালি থেকে বিমানবন্দর পৌঁছতে গিয়ে কালঘাম ছুটছে নিত্যযাত্রীদের। বিমান ধরতে পারছেন না যাত্রীরা। সবটাই হচ্ছে শুধুমাত্র বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ের বেহাল দশার জেরে। গত দু’মাস ধরে রাস্তা বেহাল হলেও চুপ জাতীয় সড়ক কতৃপক্ষ। কবে ঠিক হবে রাস্তা? উত্তর দিতে পারছেন না আধিকারিকরা।
হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, বর্ধমান থেকে বিমান ধরতে আসা যাত্রীরা ব্যবহার করেন বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ে। এছাড়া এই রাস্তা ধরেই ২ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে যুক্ত হয় । এমনকি যারা সল্টলেক, নিউটাউনের তথ্য প্রযুক্তি তালুকে কাজ করেন তারাও ব্যবহার করেন এই এক্সপ্রেসওয়ে। এই রাস্তার মাধ্যমেই ডানকুনি, বালির মতো গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন সংযুক্ত হয় । ফলে সোমবার থেকে শনিবার প্রতি ঘন্টায় কয়েক হাজার মানুষ ব্যবহার করেন এই পথ। বাস, অটো, শাটল, ছোট গাড়ি ও পণ্যবাহী লরি যাতায়াত করে এই পথে। যে সমস্ত গাড়ি কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ধরে দ্বিতীয় বিবেকানন্দ সেতু ধরে আসেন, তারা দক্ষিণেশ্বর এসে পৌছলেই খারাপ রাস্তার শিকার হচ্ছেন। যদিও তাদের মোটা টাকা টোল দিয়ে আসতে হয়। আর রাজচন্দ্রপুর দিয়ে বালিহল্ট হয়ে আসলে বালি ব্রিজ থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে যানজট। ফলে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন অফিসযাত্রী ও বিমান ধরতে আসা যাত্রীরা।
advertisement
খড়গপুর থেকে বিমান ধরার জন্য ৫ ঘন্টা আগে বেরিয়েছিলেন অধ্যাপক ভার্গব মৈত্র। বালি থেকে বিমানবন্দর যেতে সময় লাগে দু’ঘন্টা। ‘যখন গিয়ে এয়ারপোর্টে পৌছলাম তখন বিমান মাঝ আকাশে। এই রাস্তার হাল এতটাই খারাপ যে গাড়ি চালানোর অযোগ্য কিছু কিছু জায়গায়। রাস্তা না সারানো হলে দুর্ঘটনা ঘটবে।’, বিমান ধরতে না পেরে ক্ষুব্ধ ভার্গব ৷
বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ে দেখাশোনার দায়িত্বে আছে এন.এইচ.এ.আই। তাদের দাবি, দক্ষিণেশ্বর ও বরানগরে তৈরি হচ্ছে মেট্রোরেলের স্টেশন। তার জন্য দক্ষিণেশ্বর থেকে বরানগর অবধি রাস্তার একাধিক জায়গা দখল হয়ে আছে। ফলে সেই সমস্ত জায়গায় গাড়ি চলছে অত্যন্ত শ্লথ গতিতে। মেট্রোরেলের কাজের জন্য ভারী মেশিন ও গাড়ি চলাচল বেড়েছে এই পথে ফলে রাস্তা ভাঙছে দ্রুত। কিন্তু জাতীয় সড়ক ধরে তো প্রচুর ভারী গাড়ি যাতায়াত করে তাহলে রাস্তার এই হাল হবে কেন?
এন.এইচ.এ.আইয়ের বক্তব্য, বর্ষার আগে প্রতিবছর রাস্তা সংস্কার করা হয় এবছর পুরো রাস্তায় সেই কাজ করা যায়নি। এন.এইচ.এ.আইয়ের আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘আমরা মেট্রোরেলকে বলেছিলাম রাস্তার কাজ করতে। কারণ ওদের প্রকল্পের কাজ চলছে। যদিও ওরা সেই কাজ করেনি। আমাদেরকেই সেই কাজ এবার করতে হবে। রাস্তা সারানোর কাজ শুরু করা হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।’
তবে দুই দফতরের দড়ি টানাটানির মাঝে পড়ে ভোগান্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষের। রাস্তা খারাপের জেরে শুধুমাত্র যানজট বা মানুষের ভোগান্তি নয়, বাড়ছে দূষণও। ‘বাসে যাই বা শাটলে এত ধুলো ওড়ে যে চোখ খুলে রাখা যায়না। আর এটা শুধু একদিনের ঘটনা নয়। প্রতিদিন একই অবস্থা’, অভিযোগ নিত্যযাত্রী শৌনক দাসের। ভোগান্তি আরও বাড়ছে রাতের বেলায়। সন্ধ্যা সাতটা থেকে যানজট তৈরি হচ্ছে বালি থেকে। ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, কল্যাণীর ঈশ্বর গুপ্ত সেতু বন্ধ থাকায় এই পথ ধরেই সমস্ত লরি ঘুরে যাচ্ছে । ফলে যানজট তৈরি হচ্ছে। সকাল হোক বা রাত্রি সারাদিনের এই যানজটের জেরে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে দূষণও। কবে এর থেকে মিলবে মুক্তি, উত্তর হাতড়াচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা।