বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির এই ট্যুইট বক্তব্যের ইঙ্গিত যে বাবুল সুপ্রিয় ও তাঁর দল তৃণমূলকে উদ্দেশ্য করেই বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
আরও পড়ুন- নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে আজ দিল্লি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
বাবুল সুপ্রিয়। তখন তিনি আসানসোলের বিজেপি সাংসদ। মোদি মন্ত্রিসভার অন্যতম মুখ। আর সেই সময় জিতেন্দ্র তিওয়ারি আসানসোলের বাবুল সুপ্রিয়র শত্রু শিবিরের দাপুটে তৃণমূল নেতা। মেয়র। পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছের লোক হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিদিনই আসানসোলে খবরের শিরোনামে থাকতেন বাবুল-জিতেন্দ্র জুটি। এক কথায়, তাঁদের সম্পর্ক ছিল অনেকটা সাপে নেউলের মত। কোনও দিনই সুসম্পর্ক ছিল না তাঁদের। একে অপরের বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ লেগেই থাকতো বাবুল- জিতেন্দ্রর মধ্যে। এরপর গঙ্গা দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল। তৃণমূল ছেড়ে জিতেন্দ্র যোগদেন বিজেপিতে। ফের বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল। আবার জোড়া ফুল শিবির ছেড়ে পদ্ম ফুল শিবিরে লেখান নাম।
advertisement
প্রথমে বাবুলই বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল জিতেন্দ্রর বিজেপিতে যোগদানের বিষয়ে । সে কারণেই গত বিধানসভা নির্বাচনের প্রায় শেষবেলায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন আসানসোলের একসময়ের রবিনহুড হিসেবে পরিচিত জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তখন বাবুল-জিতেন্দ্র 'দাদা-ভাই'। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পদ খুইয়ে, বিজেপি সাংসদ থাকাকালীনই একদিন বাবুল সুপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লেখেন 'চললাম, Alvida '। তুমুল শোরগোল। সেদিন জিতেন্দ্র তিওয়ারি ট্যুইট করে লিখেছিলেন, 'কভি আলভিদা না কেহনা'।
আরও পড়ুন- সিএনজির অভাব, কমছে পরিবেশবান্ধব বাসের যাত্রা
নিউজ এইট্টিন বাংলাকে জানিয়েছিলেন, 'আসানসোলের জনগণের সঙ্গে বাবুলদার একটা ভালবাসার সম্পর্ক। আসানসোলের জনগণ ওঁকে ভালবাসেন। আর উনিও আসানসোলের জনগণকে ভালবাসেন। তাঁদের তিনি (বাবুল সুপ্রিয়) ছেড়ে যতে পারেবন না। তাঁদের ভালবাসা ফিরিয়ে দিতে পারবেন না। বিরোধীরা আনন্দ পাচ্ছে পাক। তিনি মন্ত্রিত্ব হারালেও বিজেপি সাংসদ হিসেবেই থাকবেন, দলে থাকবেন।’’ গেরুয়া শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়ে অবশেষে তৃণমূলে যোগ দেন বাবুল সুপ্রিয়। তৃণমূলে যোগ দিয়েই নিজের পুরনো দল বিজেপির বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগের বোমা ফাটান।
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। বাবুল তৃণমূলে যোগ দিতেই সুযোগ বুঝে আক্রমণ শানিয়েছিলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। ফেসবুক পোস্টে বাবুলকে নিশানা করে গেরুয়া শিবিরের এই নেতা জিতেন্দ্র সেদিন লিখেছিলেন, 'মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়াটা যদি জরিমানা হয়, তাহলে বিনা পরিশ্রমে রামদেব বাবার সুপারিশে এবং মোদিজির জনপ্রিয়তায় সাংসদ হওয়াটা লটারিতে প্রাইজ পাওয়ার মত নয় কি?' প্রশ্ন তুলে জিতেন্দ্রর দাবি ছিল, ‘‘বাবুল নিজের ক্যারিশ্মায় আসানসোলে জয়লাভ করেননি। রামদেবের সুপারিশে টিকিট পেয়েছিলেন আর নরেন্দ্র মোদিজির জনপ্রিয়তার কারণেই সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন।’’
আর বুধবার রাজ্যের পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই নাম না করে বাবুল সুপ্রিয় ও তৃণমূল কংগ্রেসকে ফের নিশানা করে বঙ্গ বিজেপির এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি বাবুলকে এবার পচা আলুর সঙ্গে তুলনা করলেন। এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।