কলকাতা -সহ গোটা রাজ্যে অটো চালকদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ক্ষোভ বহু যাত্রীদের । যাত্রীদের সঙ্গে অসম্ভব দুর্ব্যবহার, ট্রাফিক আইন না মানা , বেপরোয়া ভাবে অটো চালানো , উচ্চস্বরে গান বাজান , যেমন খুশি বেশি ভাড়া নেওয়া, কাটা রুট-সহ একাধিক অভিযোগ । তবে এই লকডাউনের ক্ষেত্রে সমাজের বহু ক্ষেত্রে যেমন অনেক পরিবর্তন হয়েছে, তেমনভাবে অটোচালকদের জীবনেও পরিবর্তন এসেছে । দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২৭ মে অটো চলাচল শুরু হয় । দু'জন যাত্রী নিয়ে অটো চলাচল শুরু হলেও ট্রেন, মেট্রো না চলায় যাত্রীসংখ্যা তলানীতে । সারা দিনে ১০০ টাকাও ইনকাম করতে পারছে না বহু চালক । অন্যদিকে যাত্রীরাও সুরক্ষার জন্য অনেক অটোতে উঠছে না । ফলে সব মিলিয়ে অটোচালকদের বেসামাল পরিস্থিতি ।
advertisement
তবে তাঁদের অসময়ে কাউকে পাশে না পেয়ে ক্ষোভের আগুনে পুড়ছেন অটোচালকরা । রাসবিহারী এভিনিউ-বালিগঞ্জ , গড়িয়াহাট , টালিগঞ্জ রুটের অটোচালকরা এতটাই ক্ষুব্ধ যে , তারা প্রকাশ্যেই বলছেন কোনও নেতা , মন্ত্রী কেউ তাঁদের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ায়নি । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অটোচালক জানান, "কিসের সামাজিক দূরত্ব ? চারজন করে যাত্রী এই ছোট অটোতে তুললে গায়ে গায়ে ঘেঁষে বসতে হয় , তাতে যে কেউ করোনা আক্রান্ত হতে পারেন ।" তিনি আরও বলেন, "লোকসভা, বিধানসভা তো খোলা হচ্ছে না? তা নিয়ে তো নেতারা উচ্চবাচ্য করছেন না । করোনার ভয়ে সবাই ঘরে রয়েছেন , আর আমাদের পথে বসার অবস্থা ।"
হাজরা - খিদিরপুর রুটের আরেক অটোচালক বলেন, " আমরা ইউনিয়ন কেউ সাধে করি না । পুলিশের কেস থেকে বাঁচার জন্য বাধ্য হয়ে ইউনিয়ন করি । তবে এই লকডাউন আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে । দুমাস ধরে যখন অটো বন্ধ, তখন কোন ইউনিয়নের দাদারা আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি । সবাই নিজেদের আখের গোছায় । আর আমাদের মত গরীব লোকদের অবস্থা হয়েছে শাঁখের করাতের মতো । বাধ্য হয়ে মিছিল মিটিংয়ে যেতে হয় । সামনের দিনে সব বুঝে নেব ।"
কলকাতার বিভিন্ন অটো রুটে এখনও দু'জন করে যাত্রী নিয়ে অটো চলাচল করছে। উল্টোডাঙ্গা-শোভাবাজার, আহিরীটোলা , আহিরীটোলা লঞ্চঘাট , জোড়াবাগান রুটে এখনও দু'জন করেই যাত্রী নেওয়া হচ্ছে । এই রুটের অটো চালক বাবু দাস জানান, "আমরা দুজন করেই যাত্রী নিচ্ছি । ভাড়া অল্প বাড়িয়েছি । যাত্রীদের এবং আমাদের সুরক্ষার জন্যই এই ব্যবস্থা । "
ABHIJIT CHANDA