আরও পড়ুনঃ সুখবর! দ্রুত বদলে যাচ্ছে মেট্রোর পুরানো লাইন, কমবে বিদ্যুৎ খরচ!
‘অটিজম’ চিহ্নিতকরণে এবার রাজ্যের উদ্যোগ। দেশে সর্বপ্রথম ICDS কেন্দ্রে এই বিষয়ে বিশেষ ব্যবস্থা। রাজ্য জুড়ে ৪৯ লক্ষ শিশুর সমীক্ষা করল ICDS কর্মীরা। ৫৮৪০ শিশু এই ক্ষেত্রে সন্দেহজনক। ১৭৬ জন শিশু অটিজম আক্রান্ত বলে চিহ্নিত।ইন্সটিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সের উদ্যোগে তৈরি সহজ প্রশ্নপত্র।সেই প্রশ্নপত্র নিয়েই বাড়ি বাড়ি ICDS কর্মীরা।কেন্দ্রের সাহায্য ছাড়াই দেশে সর্বপ্রথম এই কাজ করল রাজ্য। শশী পাঁজা, নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী, জানিয়েছেন সচেতনতা তৈরি করা একটা মস্ত কাজ। গ্রামাঞ্চলে সকল পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয় এই জিন ঘটিত রোগের ব্যাপারে বুঝে ওঠা। তাই সহজ প্রশ্নাবলী তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেই প্রশ্ন দেখেই ICDS কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। এছাড়া যারা চিহ্নিত হয়েছে তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে যথাযথ সাহায্য করছে রাজ্য সরকার।
advertisement
সুমিত সাহা, স্পেশ্যাল এডুকেটর অটিজম নিয়ে দীর্ঘ দিন কাজ করেন, তিনি রাজ্যের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। যে সমস্ত অভিভাবক এই ব্যাপারে বিশেষ ভাবনাচিন্তা করতেন তাদের চিন্তা অনেক লাঘব হবে বলে তিনি মনে করেন। অটিস্টিক শিশুকে প্রথমদিকে দেখে ধরা যায় না। একটু বড় অর্থাৎ ২ বছর থেকে উপসর্গ ধরা পড়তে থাকে কারণ শিশুটির সামাজিক বিকাশ ঠিকমতো হয় না। অন্যান্য স্বাভাবিক শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলো বা মেলামেশা করতে পারে না। কিছু কিছু বাচ্চার ১ থেকে ২ বছর বয়স পর্যন্ত খেলাধুলা, কথাবার্তা সব ঠিক থাকে কিন্তু হঠাৎ করে কথা ও সামাজিক মেলামেশা বন্ধ করে দেয়। এটাকে বলা হয় রিগ্রেসিভ অটিজম।এরা একা থাকতেই ভালবাসে। এবং অনেক ক্ষেত্রে কথা বলাও দেরিতে শুরু হয়।
স্বাভাবিক শিশুর মতো হাসি-কান্না কথা দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে না।কোন একটি নির্দিষ্ট জিনিসের প্রতি তাদের আকর্ষণ বেশি থাকে এবং একই কাজ এরা বারবার করতে থাকে। যেমন, দরজা-জানলা বারবার খোলা বা বন্ধ করা, জলের কল খোলা-বন্ধ ইত্যাদি।এই শিশুদের তাকানোর ধরনটা একটু অন্যরকম হয়। সরাসরি চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারে না।এই ধরনের শিশুর বুদ্ধিবৃত্তি অন্য শিশুদের মতো হয় না। কখনও এরা খুব স্পর্শকাতর হয়।অটিজমে আক্রান্ত অনেক শিশু দেখা, শোনা, গন্ধ, স্বাদ অথবা স্পর্শের প্রতি অতি সংবেদনশীল অথবা প্রতিক্রিয়াহীন থাকতে পারে।
অটিস্টিক শিশুদের প্রতি চারজনে একজনের খিঁচুনি সমস্যা হতে পারে।যে শিশুরা বিশেষ সাহায্য পেলে তাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে জীবনে ফিরতে পারে, লোকলজ্জায় বাবা-মা তাদের লুকিয়ে রাখেন ঘরে। অনেকেই সমস্যা স্বীকারও করতে চান না। স্কুলে আর পাঁচটা ছেলেমেয়ের সঙ্গে স্বাভাবিক পরিসরে মিশে তারা যে ক্রমশ জড়তা কাটিয়ে উঠতে পারত, সেই রাস্তাও কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। কাজেই এই ক্ষেত্র সবচেয়ে জরুরি বাবা-মায়ের চেষ্টা এবং সচেতনতা। সেই সঙ্গে বিশেষ যত্নের।