#কলকাতা: সিএএ উত্তর রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। ৬৪ এফআইআরে ৯৩১ জন গ্রেফতার। হাইকোর্টে রিপোর্ট দিয়ে বৃহস্পতিবার জানায় রাজ্য। শুক্রবার ৮ জনস্বার্থ মামলার একযোগে শুনানি হয়। এদিন এজলাসে শুনানি চলাকালিন, রাজ্যের রিপোর্ট ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন জনস্বার্থ মামলাকারী সুরজিত সাহা'র আইনজীবী স্মরজিৎ রায়চৌধুরী।
তাঁর কথায়, "হাওড়া জেলার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের নির্দেশিকায় জেলাশাসক জানিয়েছে, জেলাজুড়ে সমস্যা রয়েছে। ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ সমস্যা থাকলে তা হাইকোর্টকে দেওয়া রাজ্য সরকারের রিপোর্টে উল্লেখ নেই কেন? সাঁকরাইল এ পুলিশ অফিসার আক্রান্ত হয়েছে। অথচ কোনও গুরুতর জখমের ইঙ্গিত নেই রিপোর্টে।"
advertisement
প্রধান বিচারপতি এডভোকেট জেনারেল কাছ থেকে জানতে চান রাজ্যের কোথায় কোথায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ। ইন্টারনেট পরিষেবা এতদিন বন্ধ রাখার উদ্দেশ্যই বা কি। প্রধান বিচারপতির প্রশ্নের উত্তরে এডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, "গুজব আটকাতে এমন সিদ্ধান্ত। গতকাল দিল্লির একাংশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ছিল। আজ গোটা দিল্লি জুড়েই স্তব্ধ মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা।"
রাজ্য কেন সিএএ প্রতিবাদ-কে রিপোর্টে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন বলেছে তার কৈফিয়ৎ এদিন দেন অ্যাডভোকেট জেনারেল। "গোটা দেশজুড়ে আন্দোলন হচ্ছে। আজ দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাও হয়েছে। ম্যাঙ্গালুরুতে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। গোটা উত্তরপ্রদেশ জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি। আহমেদাবাদে হাজার হাজার গ্রেফতার। মধ্যপ্রদেশের ৪৩ জেলায় ১৪৪ ধারা জারি। সেই তুলনায় শেষ তিন দিন রাজ্যের পরিস্থিতি অনেক শান্ত। নতুন কোন হিংসার ঘটনা নেই।" অ্যাডভোকেট জেনারেল-এর সঙ্গে আরও বলেন, "বেশ কিছু বড় মিছিল হয়েছে তাতে কোনো অশান্তির খবর নেই। "
অন্য কয়েকটি জনস্বার্থ মামলায় আইনজীবীরা জানান, "সাংবিধানিক পদে থেকে মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্য মন্ত্রীরা যেভাবে বিবৃতি দিচ্ছেন তাতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে। আদালত হস্তক্ষেপ করুক।" রাজ্যের কোষাগারের টাকা খরচ করে এনআরসি, সিএএ সরকারি বিজ্ঞাপন বন্ধের আবেদন রাখেন আইনজীবী নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য।
শুক্রবার শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণণ এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ে'র ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানায়, "দীর্ঘ সময় ধরে ইন্টারনেট মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা যায় না। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখলে তার উপযুক্ত কারণ দর্শানো উচিত।" রেল স্টেশন রেলের ক্ষতি ভবিষ্যতে যাতে আর না হয়, তানিয়ে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা এদিন স্মরণ করিয়ে দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিনই হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, সোমবারের মধ্যেই রাজ্য জেলাভিত্তিক বিশদ রিপোর্ট তৈরি করবে। সিএএ পরিস্থিতি নিয়ে এই রিপোর্ট হলফনামার আকারে পেশ করবে আদালতে। পাশাপাশি সিএএ নিয়ে রেল ও ভারত সরকারকেও রিপোর্ট তৈরি রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ফের জনস্বার্থ মামলাগুলির শুনানি।