ইতিমধ্যেই সংগঠনের হাল হকিকত নিয়ে রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতাদের। একাধিক বিষয়ে তুলে ধরে বিশেষ ভাবে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে সংগঠনের ফাঁকফোকর৷ তবে বর্তমানে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতির উপরেই বিশেষ জোর দিতে চাইছেন নেতৃত্ব৷
advertisement
(১) পঞ্চায়েত প্রস্তুতি: পঞ্চায়েতের প্রস্তুতি একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে খবর। রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবিরের বিরুদ্ধে দলের একাংশের অভিযোগ, গত পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির জয়ী হওয়া প্রার্থীদের বেশিরভাগই নিষ্ক্রিয়। গতবার গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে পদ্ম প্রতীকে জয়ীদের ৮০ শতাংশের সঙ্গেই যোগাযোগ করেননি রাজ্যের নেতারা। অর্ধেক জেলা সভাপতিরা তাঁদের চেনেই না। তার উপরে অধিংকাংশ জেলাতেই এখনও প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়নি।
(২) বুথ সশক্তিকরণ: সেখানেও বুথের অবস্থা নিয়ে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট উঠে এসেছে। বিজেপি সূত্রের খবর, বুথে সংগঠন গড়ে তোলার যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল তার ধারে কাছে এখনও পৌঁছতে পারেনি বঙ্গ বিজেপি। গত মার্চ মাস থেকে ঢাকঢোল পিটিয়ে শুরু হয়েছিল বুথ সশক্তিকরণ অভিযান। নেতা-কর্মীদের উৎসাহিত করতে মাঠে নামানো হয়েছিল দলের তারকা নেতা মিঠুন চক্রবর্তীকেও। রাজ্য নেতৃত্বকে জেলা ও মণ্ডলস্তর পর্যন্ত প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যুক্ত করা হয়েছিল। এসবই চেষ্টা করেছিল দিল্লি। তারপরও কেন নিচুতলার সংগঠন গড়ার কাজে সাফল্য এল না, সেই প্রশ্ন উঠেছে দলেরই অন্দরে। ফলে এই দু’টি বিষয়েই অমিত শাহর বৈঠকের আগে হোমওয়ার্ক করে রাখতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি।
বুথ কমিটি তৈরি সহ নানান ইস্যুতে একাধিকবার সুনীল বনশল থেকে মঙ্গল পাণ্ডেদের মতো কেন্দ্রীয় নেতাদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যের নেতাদের। দলীয় সূত্রে খবর, দক্ষিণবঙ্গে গড়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বুথে কমিটি হয়েছে। হাওড়া, হুগলি ও দুই ২৪ পরগণাতে গড়ে ২০ শতাংশ, মালদহ-মুর্শিদাবাদে ১০ থেকে ২০ শতাংশের মতো, দুই মেদিনীপুর, নদিয়া, দুর্গাপুর-আসানসোল ও জঙ্গলমহলের জেলাগুলোয় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বুথে কমিটি তৈরি হয়েছে।
উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও দুই দিনাজপুরে গড়ে কমিটি হয়েছে ৬০ শতাংশ বুথে। আর এই অগ্রগতি দেখে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে একটা জেলা পরিষদও পদ্মের দখলে আসবে কি না তা নিয়ে নিশ্চিত রিপোর্ট নেই দলের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায়।
ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী।