TRENDING:

জল থেকে কাঠামো দ্রুত তুলে নেওয়া হলেও, আটকানো যায়নি দূষণ, অভিযোগ পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের

Last Updated:

আগামী বছর থেকে বিকল্প ব্যবস্থা আসতে পারে ভাসানে, জানালেন ফিরহাদ হাকিম

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কলকাতা: গঙ্গায় প্রতিমা নিরঞ্জন নিয়ে অনেক দিন ধরেই সরব হয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, দুর্গা ঠাকুরের অনেকগুলি কাঠামো হয়। ফলে কাঠামো জলে ডুবিয়ে তুলে নিলেও এতগুলি প্রতিমার রং গঙ্গায় গিয়ে মিশছে। তাতে গঙ্গা দূষণ হয়। নদীতে ভাসান রুখতে দু’বছর আগে মামলা করেছিলেন এক বিজ্ঞানী অম্বরনাথ সেনগুপ্ত। যার প্রেক্ষিতে গঙ্গায় ভাসান দেওয়া নিয়ে নির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরি করতে জাতীয় পরিবেশ আদালত রাজ্যকে নির্দেশও দিয়েছিল। কিন্তু সে নির্দেশ মানা হচ্ছে না বলে দাবি পরিবেশবিদদের। আর তাতেই চূড়ান্ত হতাশ পরিবেশবিদরা। তাদের বক্তব্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু গঙ্গায় ভাসান তো হয়েই চলেছে। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত জানিয়েছেন, চলতি বছরেও দূষণ আটকানো যায়নি। কাঠামো দ্রুত তুলে ফেলা হলেও, আনুষঙ্গিক জিনিষ ভেসেই বেড়াচ্ছে তা থেকে দূষণ ছড়াচ্ছে। তার দাবি, তিনি এই অবস্থার ছবি তুলে রেখেছেন আদালতে তা জানাবেন তিনি। নদী-পুকুরে বিসর্জনের কারণে জল দূষিত হওয়ায় জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের ক্ষতি হয়। জলাশয়ে ভাসান অবিলম্বে বন্ধ করা হোক।
advertisement

এ মর্মেই ২০১৭ সালে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা করেছিলেন দমদমের বাসিন্দা তথা কেন্দ্রীয় জ্বালানি গবেষণা সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী অম্বরনাথবাবু। ‘ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা’-র (এনএমসিজি) সাম্প্রতিক নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ওই মামলার রায় ফের আলোচনায় উঠে এসেছে। যেখানে এনএমসিজি পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১১টি রাজ্যকে চিঠি দিয়ে গঙ্গায় প্রতিমা ভাসান দিতে বারণ করেছিল। প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য গঙ্গা বা তার শাখাপ্রশাখার পাশে সাময়িক ভাবে পুকুর বা জলাধার করতে বলা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রক সূত্রের খবর, গঙ্গা দূষণ রুখতেই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছিল। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, প্রতিমায় যে রং করা হয়, তাতে ক্রোমিয়াম, সিসা-সহ ক্ষতিকর পদার্থ থাকে। তা জলে মিশে জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের ক্ষতি করে। সুভাষবাবুর প্রশ্ন, জাতীয় পরিবেশ আদালত বিসর্জন নিয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম মানতে বললেও তা মানা হচ্ছে কোথায়?

advertisement

অন্যদিকে চলতি বছরে বিকল্প ভাসানের ব্যবস্থা করেছে ত্রিধারা। সুভাষবাবু সেই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও, তার দাবি, এটা পাকাপাকিভাবে সমস্যার সমাধান নয়। আসল সমস্যা বুঝে সমাধানের পথ খুঁজে বার করতে হবে। অন্যদিকে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, আগামী বছর থেকে বিকল্প ব্যবস্থা চালু হতে পারে। সেক্ষেত্রে গঙ্গার জল তুলে তা দিয়ে পাড়েই ভাসান কাজ সম্পন্ন হতে পারে। এই বিষয় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সাথে তারা আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। গঙ্গায় প্রতিমা নিরঞ্জন নিয়ে অনেক দিন ধরেই সরব হয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, কাঠামো জলে ডুবিয়ে তুলে নিলেও এতগুলি প্রতিমার রং গঙ্গায় গিয়ে মিশছে। তাতে তো গঙ্গা দূষণ হচ্ছেই। কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের তরফে পুজো পর্ব শুরুর সময় থেকেই গঙ্গা দূষণ রুখতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘নো পলিউশন দুর্গা পুজো’ শীর্ষক নিয়মিত প্রচার চালানো হচ্ছে। সেখানে নিরঞ্জনের আগে প্রতিমার গা থেকে পুজোর ফুল, প্রসাধনী বা সাজ খুলে রাখার কথা বলা হচ্ছে। এমনকি, গঙ্গা দূষণ আটকাতে সেখানে প্রতিমার বসনও খুলে রাখতে বলা হয়েছে।

advertisement

গঙ্গায় বিসর্জন নিয়ে মামলা করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তও। তাঁর বক্তব্য, দেশের অনেক জায়গার মতো এলাহাবাদেও গঙ্গায় প্রতিমা নিরঞ্জন সম্পূর্ণ বন্ধ। সুভাষবাবুর কথায়, ‘‘গঙ্গা যে সব রাজ্যের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে, তাদের সবারই ভাসানের ক্ষেত্রে অভিন্ন নীতি হওয়া উচিত। অন্য রাজ্য পারলে পশ্চিমবঙ্গ বা কলকাতা পারবে না কেন?’’যদিও শেষ মুহূর্তে ভাসান দেওয়ার জন্য বিকল্প জলাশয়ের ব্যবস্থা করা কার্যত অসম্ভব বলেই মনে করেছেন রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকদের একটা বড় অংশ। তাঁদের বক্তব্য, ভাসানের ক্ষেত্রে পরিবেশবিধি মানতে এমনিতেই কড়া নজর রাখা হয়। প্রতিমার ফুল সরানোর পাশাপাশি সাজসজ্জাও খুলে রাখা হয়। কলকাতা পুরসভার আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, বহু বছর ধরে দূষণ বিধি মেনেই ভাসানের ব্যবস্থা করা হয়। ভাসানের জন্য পরের বছর  বিকল্প ব্যবস্থা করা যাবে কি? সেই ব্যবস্থা কি সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত হবে? আপাতত পরিবেশবিদদের মধ্যে আলোচনা চলছে তা নিয়েই। সুভাষবাবু জানিয়েছেন, চলতি বছরেও গঙ্গার জল সংগ্রহ করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার জন্যে পাঠানো হয়েছে। ফলের অপেক্ষায় আছেন তারা।

advertisement

ABIR GHOSHAL

বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
জল থেকে কাঠামো দ্রুত তুলে নেওয়া হলেও, আটকানো যায়নি দূষণ, অভিযোগ পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল