ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৯০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ১১.৩০-এ। ৫০ বছর বয়সি সতেন্দ্র প্রসাদ গুপ্তা ভবানীপুরের হেড কনস্টবলের ডিউটি শেষে L9 দোতলা বাসে চড়ে ডানলপে পুলিশ কোয়ার্টারে ফিরছিলেন। রাস্তায় খুব জ্যাম থাকায় পুলিশ ইউনিফর্ম-এ থাকা সতেন্দ্রকে লক্ষ করে থুতু ছিটায় কিছু বাসযাত্রী! বঁধে যায় বচসা। এরপর শ্যামবাজার ট্রাফিক গার্ডের কনস্টেবল নারায়ণ রায় শ্যামবাজার থেকে ওই বাসেই ওঠেন। দেখেন, সতেন্দ্রকে ঘিরে লোকজন ঝামেলা করছে। প্রতিবাদ করলে নারায়ণের গলার নলি টিপে ধরে হয় বলে অভিযোগ। এরপর চিৎপুর থানা এলাকায় চুনিবাবুর বাজারের কাছে বাস এলে, ওই দুই পুলিশ কর্মীকে মারধর করে বাসের পা-দানিতে নামিয়ে আনা হয় ও চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়।
advertisement
আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সতেন্দ্রর মৃত্যু হয়, গুরুতর আহত নারায়ণের চিকিৎসা চলে হাসপাতালে। জানা যায়, বাস যখন কাশিপুর থানায় ঢোকানো হচ্ছিলো তখন অভিযুক্তরা পালায়। চিৎপুর থানার কেস হলেও লালবাজার হোমিসাইড তদন্তভার হাতে নেয়। নীলগঞ্জ ডিপোতে তদন্তকারীরা খোঁজ নিয়ে একটি অফিস ব্যাগ পান। সেটার ভিতর বিজলী গ্রিল-এর ঠিকানা ছিল। তদন্তকারীরা বিজলী গ্রিল সোডা কোম্পানিতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, সেটি অনুপম বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাগ! খুন ও খুনের চেষ্টায় দোষী সাব্যস্ত অনুপম বিজলী গ্রিলে সেলসম্যান-এর কাজ করত। বরাহনগরে বাড়ি অভিযুক্তর।
১৯৯১ সালের ২ নভেম্বর অনুপম বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে হোমিসাইড দফতর। সেই ঘটনায় আজ সাজা শোনাল আলিপুর আদালত। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন ), ৩০৭ ( খুনের চেষ্টা ),৩৪( একত্রে একসঙ্গে অনেকে মিলে সংগঠিত অপরাধ ) ধারায় মামলা দায়ের হয়। আলিপুর এডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট এন্ড সেশন জজ স্পেশাল কোর্ট ( EC Act)-এর বিচারক অজয় কুমার সিং অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন সাজা দেন। বৃহস্পতিবার সরকারি আইনজীবী জানান," ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় পুলিশকে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে খুনের ঘটনায় অনুপম বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করে আদালত। " অভিযুক্তর আইনজীবি জানান, তারা উচ্চ আদালতে যাবেন এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে।
Arpita Hazra