পৃথিবীর আজ গভীর অসুখ। সেই অসুখ সারাতেই নেশায় মেতেছেন ইতালির অ্যালেক্স। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দশটি নদীতে ঘুরে বেড়ানো...ঘাটে ঘাটে ঘুরে সেখানকার মানুষদের সচেতন করা...
যে নদীকে ঘিরে একদিন মানবসভ্যতা গড়ে উঠেছিল সেই নদীই আজ বিপন্ন.. জলজীবন তো বটেই বিপন্ন প্রাণ। এই বিপদ ডেকে এনেছি আমরাই।
গঙ্গা মইলি হো গই... গঙ্গার শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণ রোগ। দূষণের কবলে সেই গঙ্গাই আজ ধুঁকছে ৷ ভেসে বেড়াচ্ছে নোংরা, আবর্জনা...
advertisement
বারাণসী থেকে শুরু করেছেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে গঙ্গার বুকে ঘুরে এইসমস্ত দৃশ্যেরই সাক্ষী থেকেছেন ইতালির অ্যালেক্স বেলিনি। তাঁর এই প্রজেক্টের নাম টেন রিভারস ওয়ান সি ৷
টেন রিভারস ওয়ান সি প্রজেক্টটি চলবে ৩ বছর ধরে ৷ ১০ নদী ও ১ সমুদ্রে রোয়িং৷ ২৫ফেব্রুয়ারি বারাণসী থেকে শুরু হয় এই প্রজেক্টটি ৷ ৩১ মার্চ শেষ গঙ্গাযাত্রা ৷
নেশা ছিল রোয়িং-এর। প্রশান্ত মহাসাগরে রোয়িং করতে গিয়েই সমুদ্র দূষণের ভয়াবহ ছবি সামনে আসে। গবেষণায় জানতে পারেন, সমুদ্রে দূষণ ছড়ানো প্লাস্টিকের ৮০ শতাংশই নদী থেকে মেশে। তারপরই বেরিয়ে পড়েন.. শুধু দূষণের মাত্রা খতিয়ে দেখা নয়, নদীতীরের বাসিন্দাদের সচেতন করার প্রতিজ্ঞা নেন।
দূষণের কথা মাথায় রেখেই অ্যালেক্স তাঁর নৌকায় মোটর ব্যবহার করেননি। সাধারণ বাঁশ আর গঙ্গায় ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের ড্রাম দিয়েই বানিয়েছেন নৌকা। এই গোটা প্রোজেক্টটি ক্যামেরাবন্দি করছেন সঙ্গী মার্কো।
এতদিন এসব নিয়ে মাথা ঘামাননি মুম্বইয়ের বাসিন্দা কুণাল রায়। অ্যালেক্সের প্রজেক্টে সাহায্য করতে গিয়ে তিনিও গঙ্গাদূষণ নিয়ে মানুষকে সচেতন করার কাজ শুরু করেছেন।
এখানেই থামছেন না অ্যালেক্স। এরপরের গন্তব্য এখনও নিশ্চিত নয়। এ পৃথিবীর বুকেই কোনও এক নদীর ঘাটে পৌঁছে যাবেন তিনি। অ্যালেক্স না হয় স্বপ্ন দেখছেন দূষণহীন সমুদ্রের। কিন্তু আমাদের হুঁশ ফিরছে কি ?